বরিশাল নগরীর শতবর্ষী জলাশয় বিবির পুকুরের সৌন্দর্য ফেরাতে ফোয়ারা বসানো হলেও পুকুরের দক্ষিণ পাশে সম্প্রতি স্থাপন করা হয়েছে লোহার বিশাল খাঁচা। এখন পুরো এলাকা নেট দিয়ে ঘিরে দেওয়ার প্রস্তুতিও চলছে, যা নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, এই খাঁচা পুকুরের খোলা আকাশ ও মুক্ত সৌন্দর্য হারাতে পারে।
বিবির পুকুর শুধু একটি জলাশয় নয়, এটি শহরের ইতিহাসের অংশ। জানা গেছে, খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারক উইলিয়াম কেরি ১৮০০ সালে বরিশালে এসে পর্তুগিজ দস্যুদের হাত থেকে এক মুসলিম নারীকে উদ্ধার করেন। ওই নারী নিঃসন্তান হওয়ায় ১৯০৮ সালে নিজের জমিতে পুকুর খনন করেন, যার নাম দেওয়া হয় জিন্নাত বিবি।
প্রায় ৪০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৮৫০ ফুট প্রস্থের এই পুকুর একসময় কীর্তনখোলা নদীর সঙ্গে খালের মাধ্যমে যুক্ত ছিল। নদীর জোয়ারে পানি এসে ভরে দিত পুকুর, মাছও আসত। তবে আজ সেই খাল বিলুপ্ত, পুকুরটি বদ্ধ ও নিস্তরঙ্গ হয়ে গেছে।
স্থানীয় কবি ও ইতিহাসবিদ হেনরি স্বপন বলেন, “যে শহর নিজের জলাশয় বাঁচাতে পারে না, সে তার ইতিহাসও টিকিয়ে রাখতে পারে না।”
বরিশাল সিটি করপোরেশনের বাজার কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, কিছু ব্যক্তি অবৈধভাবে দোকান বসিয়ে ভাড়া তুলছিলেন, তাই উচ্ছেদ করা হয়েছে। বৈধ ব্যবসায়ীদের জন্য স্টিকার দেওয়া হচ্ছে এবং প্রতিদিন ৫০ টাকা ভাড়া নেওয়া হবে।
সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী জানান, ফোয়ারার কাজ শেষ হলে পুকুর তার আগের রূপ ফিরে পাবে এবং ময়লা পড়া রোধে গ্রিল ও নেট বসানো হচ্ছে।