Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Sun, Nov 2, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বানিজ্য
    • ব্যাংক
    • পুঁজিবাজার
    • বিমা
    • কর্পোরেট
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • মতামত
    • অন্যান্য
      • খেলা
      • শিক্ষা
      • স্বাস্থ্য
      • প্রযুক্তি
      • ধর্ম
      • বিনোদন
      • সাহিত্য
      • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » দেশে হঠাৎ অস্ত্র প্রশিক্ষণ কেন, ঝুঁকি কোথায়?
    বাংলাদেশ

    দেশে হঠাৎ অস্ত্র প্রশিক্ষণ কেন, ঝুঁকি কোথায়?

    এফ. আর. ইমরানNovember 1, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    সরকারিভাবে আত্মরক্ষার সঙ্গে শ্যুটিংয়ের মৌলিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে তরুণদের/ প্রতীকি ছবি
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    বাংলাদেশে প্রায় নয় হাজার তরুণ-তরুণীকে আত্মরক্ষার নানা কলা-কৌশল এবং আগ্নেয়াস্ত্র বিষয়ে মৌলিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার এক নজিরবিহীন কর্মসূচী হাতে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

    যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলছেন, ভবিষ্যতে এই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নাগরিকরা দেশের রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবে। দেশের ক্রান্তিকালে প্রয়োজনে শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

    নভেম্বর মাস থেকেই এই প্রশিক্ষণ শুরু হতে যাচ্ছে, এখন চলছে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম।

    যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলছেন, জাতীয় নিরাপত্তা জোরদার করতে তরুনদের প্রশিক্ষিত করার জন্য এটি পাইলট প্রকল্প।

    তিনি বলেন, “আইডিয়াটা হচ্ছে গণপ্রতিরক্ষা বাস্তবায়ন করা বাংলাদেশে। আমাদের সামরিক এবং ভৌগলিক বাস্তবতায় এটা আমাদের জন্য অপরিহার্য। সবসময় যে যুদ্ধ করতে হবে এমন নয়; কিন্তু তারপরেও একটা মোর‍্যাল থাকা যে রিজার্ভ ফোর্সের সংখ্যাটা বাড়ছে।”

    আসিফ মাহমুদ বলছেন, “যে ভৌগলিক সামরিক অবস্থান বাংলাদেশের আছে, সেখানে গণপ্রতিরক্ষা ছাড়া আমাদের অন্য কোনো উপায় নাই।

    তিনি বলেন, কারো যদি মৌলিক প্রশিক্ষণ থাকে, যে এটলিস্ট জানবে যে কীভাবে একটা অস্ত্র চালাতে হয়। তার হাতে অস্ত্র তুলে দিতে পারলে দেশকে সার্ভ করতে পারবে।

    দেশের ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপি কেন্দ্রে ৮২৫০ জন তরুণ ও ৬শ তরুণী পনের দিনের এই আবাসিক প্রশিক্ষণের সুযোগ পাচ্ছে। ১৮-৩৫ বছর বয়সী বাংলাদেশের নাগরিকরা আবেদন করতে পারবে।

    কীভাবে প্রশিক্ষণ হবে-

    সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে একে আত্মরক্ষামূলক মৌলিক প্রশিক্ষণ বলা হচ্ছে। যেখানে জুডো, কারাতে, তায়কোন্দ এবং শ্যুটিং বিষয়ে মৌলিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বিকেএসপির সাতটি আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এই আবাসিক প্রশিক্ষণ হবে। ১৫ দিনের এই প্রশিক্ষণ শেষে ৪২০০ টাকা ভাতা এবং থাকা খাওয়া ও পোশাক দেওয়া হবে।

    তরুণ তরুণীদের জুডো কারাতে তায়কোন্দ এবং শ্যুটিংয়ের মৌলিক প্রশিক্ষণ কেবল আত্মরক্ষাই নয়, এটি বাংলাদেশের ভবিষ্যতে রিজার্ভ ফোর্সের বৃদ্ধির কৌশল বলে বলছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।

    তিনি আরো জানান, এই প্রশিক্ষণে সরাসরি বুলেট ফায়ারিং শেখানোর ইচ্ছা থাকলেও গুলির অনুমোদন, বাজেট ও অবকাঠামো জটিলতার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি।

    তরুণরা অস্ত্র হাতে কী ধরনের প্রশিক্ষণ পাবে- এ প্রশ্নে আসিফ মাহমুদ বলেন, গুলি ছোড়া বাদে অস্ত্র চালানোর সবকিছুই শেখানো হবে। ফায়ারিংয়ের থিওরিটিকাল দিকটা শেখানো হবে একই সঙ্গে প্রাকটিক্যাল দিকটাও শেখানো হবে।

    “এইম করা, তারপর পজিশনিং করা, ফলো থ্রু করা, তারপর ট্রিগার করা। তবে সরাসরি ফায়ারিং করাটার অনুমতি সংক্রান্ত অনেকগুলো বিষয় আছে, আমাদের অ্যামুনেশন লাগবে সবকিছু মিলিয়ে ওইটাতে আমরা এখনই যেতে পারছি না। তবে ভবিষ্যতে আমার মনে হয় যে আরো বড় পরিসরে করার সুযোগ এবং প্রয়োজনীয়তা রয়েছে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে।”

    আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া
    আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। ছবি: বিবিসি

    এই প্রশিক্ষণ কেন প্রয়োজন এ প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, গণপ্রতিরক্ষার আইডিয়া থেকেই তার মন্ত্রণালয় এই উদ্যোগ নিয়েছে। এর মাধ্যমে জনগণকে প্রতিরক্ষার দিক থেকে সচেতন করা এবং ন্যুনতম প্রশিক্ষণ দেওয়াটাই উদ্দেশ্য। যদি কখনও সেরকম পরিস্থিতি আসে বাংলাদেশে সংকটময় মুহূর্ত আসে মানুষ যাতে ঝাপিয়ে পড়ে।

    “আমার মনে হয়েছে যে দেশে যদি কখনও সিকিউরিটি ক্রাইসিস হয় এবং আমাদের যে ভৌগলিক বাস্তবতা সেটা হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না। পৃথিবীতে আমরা ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজায় যুদ্ধ দেখেছি। কথায় কথায় যুদ্ধ বেধে যাচ্ছে। প্রস্তুতি থাকতেতো সমস্যা নাই”।

    ভবিষ্যতে অবকাঠামো এবং বাজেট প্রনয়নের মাধ্যমে প্রতিবছর কমপক্ষে বিশ হাজার যুবকদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা আছে বলে জানান যুব ও ক্রীড় উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে সরাসরি গুলি চালানোর প্রশিক্ষণ দিয়ে তরুণদের প্রশিক্ষিত করা দরকার।

    “লাইভ রাউন্ড ফায়ারিং পর্যন্ত শেখানো যায়, তাহলে আমার মনে হয়, এটা গণপ্রতিরক্ষার জন্য, জাতীয় প্রতিরক্ষার জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ অন্তর্ভুক্তি হবে। ইয়ারলি বিশ হাজার জনকে প্রশিক্ষণ দিতে পারি তাহলে এটাও আমাদের জন্য বড় অর্জন হবে। দশ বছরে ট্রেইন্ড ফোর্স বেড়ে যাচ্ছে দুই লক্ষ্য। যেটা হিউজ। এবং এটা রিজার্ভ ফোর্সে অন্তর্ভুক্ত হবে” বলেন, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

    ‘আগ্নেয়াস্ত্র’ প্রশিক্ষণ নিয়ে উদ্বেগ-

    সাধারণ নাগরিকের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র প্রশিক্ষণের বিষয়টি স্পর্ষকাতর। এছাড়া বিশ্বব্যাপী তরুণ ও সিভিলিয়ানদের অস্ত্র-গুলি থেকে দূরে রাখার ব্যাপারে সোচ্চার অনেকে। ক্রীড়া উপদেষ্টা তার ফেইসবুক পেইজে চারধরনের প্রশিক্ষণের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

    যদিও বলা হচ্ছে, সরাসরি গুলি চালানো শেখানো হবে না, তারপরও অস্ত্র সম্পর্কে মৌলিক জ্ঞান থাকলে সেটিও উদ্বেগের কারণ হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। এছাড়া ভবিষ্যতে পূর্ণাঙ্গ অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

    বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নাগরিকদের জন্য বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রচলন রয়েছে। তবে এই কার্যক্রম সেদেশের জাতীয় কৌশল ও নীতির আলোকে হয়। বাংলাদেশে এ প্রকল্পে সেরকম কোনো জাতীয় কৌশল বা নীতি অনুপস্থিত।

    নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ ন ম মুনীরুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন দেশে যে প্রশিক্ষণ আছে, সেটার ব্যাপারে একটা ডিটেইল ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি আছে। যেটা কোনো মন্ত্রণালয় করে না। সেটা দেশের পার্লামেন্টে পাস করে একটা নীতিমালা করা হয়। খুবই বিষদভাবে এটা করা হয়। কাজেই সে ধরনের কোনো জাতীয় কৌশল নীতি আমাদের কাছে নাই।

    “এটা পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে একটি মন্ত্রণালয়ের ধারণা থেকে এটা আসছে, কাজেই কোনো জাতীয় নীতিমালা আছে বলে আমি মনে করছি না। এ ধরনের কার্যক্রম জাতীয় নীতিমালা ছাড়া করা যায় না। কারণ এর সঙ্গে স্পর্শকাতর জিনিসপত্র জড়িত থাকে, জাতীয় নিরাপত্তা জড়িত থাকে এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ভাল হতে পারে বা খারাপও হতে পারে।”

    মেজর জেনারেল (অব:) আ ন ম মুনীরুজ্জামান
    মেজর জেনারেল (অব:) আ ন ম মুনীরুজ্জামান। ছবি: বিবিসি

    গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির একটা অবনতি লক্ষ্য করা গেছে। আন্দোলনের সময় লুট হওয়া পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর বহু অস্ত্র-গুলি এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া অবৈধ অস্ত্রের উপস্থিতি ধরা পড়ছে। এরকম একটা অবস্থায় অস্ত্র প্রশিক্ষণ কারা পাবে এবং সেটি কীভাবে তারা কাজে লাগাবে সেই সন্দেহ থেকেই যায়।

    মি. মুনীরুজ্জামান বলেন, “কী ধরনের লোক এখানে প্রশিক্ষণ পাচ্ছে, তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড যদি চেক করা না হয়, তাহলে হয়তো ভুল কিছু লোক প্রশিক্ষণ পেয়ে যেতে পারে। যদি ভুল কিছু লোক প্রশিক্ষণ পেয়ে যায়, তারা প্রশিক্ষণ পাওয়ার পরে সেটা যদি অন্যকাজে ব্যবহার করে, তাহলে দেশের জন্য ভালোর চাইতে খারাপ হয়ে যাবে।”

    তরুণ শিক্ষার্থীদের কী বলছেন-

    বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকের বিষয়টি সম্পর্ক স্পষ্ট ধারণা নেই। কেউ কেউ বলছেন, প্রশিক্ষণ বিষয়ে পরিস্কার করে তথ্য দেওয়া হয়নি।

    সায়মা তাসনীম নামে একজন বলছেন, আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ জরুরী।

    “আমার কাছে মনে হয়েছে ট্রেনিংটা দরকার। এবং আমিও বেশ আগ্রহী। এই নিউজটা ভালভাবে প্রচার হয়নি। আমি প্রচুর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করি আমি নিজে জানি না। আত্মরক্ষার প্রয়োজনে মেয়েদের জন্য এটা খুবই দরকার। কারণ আমরা জানি সাম্প্রতিক সময় রেপ অনেকটা বেড়ে গেছে।”

    ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান তরুণদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়ার ঝুঁকির দিক তুলে ধরে বলেন অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে অবৈধ অস্ত্রের কারবার বেড়ে যেতে পারে।

    “যেহেতু অস্ত্র চালানোর একটা প্রশিক্ষণ আছে আমার তখন লিগ্যালের বাইরে অবৈধ একটা মাফিয়া গড়ে উঠবে যে কীভাবে অস্ত্র সাপ্লাই দেওয়া যায় বা আমি কীভাবে অবৈধ অস্ত্রটা কিনতে পারবো। কারণ বাংলাদেশে মোটামুটি কোনো কিছু লিগ্যালি করা অনেক প্রসেসের মধ্যে অনেক ঝামেলার মধ্যে যেতে হয় বা অনেক সময় দামও বেশি থাকে। তো ওই যায়গা থেকে দেখা যাবে যে অবৈধ কাজকর্ম অনেক বেড়ে যাবে।”

    বাংলাদেশে নাগরিকদের একটি বড় অংশ তরুণ
    বাংলাদেশে নাগরিকদের একটি বড় অংশ তরুণ। ছবি: বিবিসি

    বাংলাদেশ থেকে বাইরে বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠনে যুক্ত হওয়ার নজির রয়েছে। নানা বিচার বিশ্লেষণ থেকে সাধারণ নাগরিকদের অস্ত্রের প্রশিক্ষণের ঝুঁকির কথা বলছেন শিক্ষার্থীরাও।

    প্রান্ত নামে একজন বলেন, “দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ যে তরুণরা, তারা সবাই চায় তার দেশকে রক্ষা করার জন্য। কিন্তু বিষয়টা হচ্ছে আমরা অস্ত্র ট্রেনিং নেওয়ার মতো ওই যে মানসিক ম্যাচিউরিটি ওই অবস্থাতে আমরা নাই।”

    অস্ত্র প্রশিক্ষণ পেয়ে ভবিষ্যতে তাদের ভূমিকা কেমন হবে, সেই প্রশ্ন তোলেন সাফফাত রহমান। “তারা এইটাকে কীভাবে ব্যবহার করবে বা কী উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবে, সেটা একটা বড় প্রশ্ন থেকে যায় কারণ তারাতো কোনো আর্মি বা প্রতিরক্ষা সংস্থায় আছে, তাদের মতো চেইন অফ কমান্ডে আবদ্ধ না।”

    প্রথম বর্ষের একজন ছাত্র রাহাত আহমেদ বলেন, আমি অবশ্যই প্রশিক্ষণে আগ্রহী। তবে সেটি আর্মির যে শৃঙ্খলার প্রশিক্ষণ সেটা দিতে হবে। অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়ে তার বক্তব্য-

    “আমরা অল্প বয়সে অনেক কিছু জানবো যেটা আমাদেরকে অনেক খারাপ দিকে মোটিভেট করতে পারে। সো আমি মনে করি যে এটা অবশ্যই ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।”

    যাচাই বাছাই কীভাবে-

    আত্মরক্ষা এবং অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য কীভাবে বাছাই করা হবে, সেটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যেসব উদ্বেগ ও ঝুঁকির দিক উঠে আসছে, সেটি নিয়ে সরকার কতটা সচেতন এ প্রশ্ন রয়েছে। অনলাইনে আবেদনের যে ফরম বিকেএসপির ওয়েবসাইটে রয়েছে, সেখানে প্রশিক্ষণে আবেদনের মানদণ্ড এবং কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে।

    শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে এসএসসি বা সমমান উল্লেখ করা হয়েছে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে চারিত্রিক সনদপত্রসহ চার ধরনের সনদপত্র এবং মামলা না থাকার একটি অঙ্গীকারনামা পেশ করার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ কোনো ফৌজদারি বিধিতে মামলার আসামি হলে তিনি এই প্রশিক্ষণের জন্য উপযুক্ত হবেন না। ক্রীড়া উপদেষ্টা জানান, সতর্কতার সাথে স্ক্রুটিনি করবো।

    “সিলেকশন প্রসেসটা ফেয়ার এবং একই সাথে যেন কোনো জঙ্গীগোষ্ঠীর লোকজন ট্রেনিং নিতে না পারে, সেটা করার আমরা পরিকল্পনা করছি এবং যারা প্রকল্প পরিচালক এবং বিকেএসপির ডিরেক্টর ডিজি ওনারা দায়িত্বে থাকবেন ওনারা আর্মি ব্যাকগ্রাউন্ডের পার্সেনাল, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, কর্নেল পর্যায়ের আর্মি পার্সনেল। সেখানে আমরা স্ক্রুটিনিটা ভালভাবে করবো। এই ডাটাবেজটা আমাদের কাছে রাখবো যে কারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।”

    প্রশিক্ষণের জন্য তরুন-তরুণীদের আবেদন বাছাই করতে একটা সিলেকশন কমিটি করা হবে। সেখানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি থাকবে। বিকেএসপির কর্মকর্তা থাকবেন।

    উপদেষ্টা বলছেন, “কমিটিতে রানিং সার্ভিং আর্মি অফিসাররা আছেন, ওনারাই থাকবেন। এছাড়া আমরা এর বাইরে এক্সপার্টদের রাখবো যাতে করে সিলেকশন প্রসেসে কোনো ব্যাড এলিমেন্ট ঢুকতে না পারে। ব্যাড এলিমেন্ট বলতে উগ্র কোনো গোষ্ঠীর সদস্যরা যারা প্রকাশ্যে বা গোপনে আছেন, তারা যেন কেউ ঢুকতে না পারে সেজন্য গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতা নেব।”

    জুডো, কারাতে এবং তায়কোন্দ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে তরুণদের
    জুডো, কারাতে এবং তায়কোন্দ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে তরুণদের। ছবি: বিবিসি

    এই প্রশিক্ষণ ধাপে ধাপে দুই আড়াই বছরে বাস্তবায়ন হবে।

    নিরাপত্তা বিশ্লেষক আ ন ম মুনীরুজ্জামান মনে করেন, জাতীয় প্রতিরক্ষা জোরদারের এবং অস্ত্র প্রশিক্ষণের বিষয়টি জড়িত থাকলেও এখানে স্বচ্ছতার ঘাটতি আছে।

    “অস্ত্র প্রশিক্ষণ বা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার জন্য তাদের উপরে কোনো দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয় নাই। কাজেই স্বচ্ছতার অভাব থাকলে নানা ধরনের সন্দেহ দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে আমরা এখন একটা স্পর্শকাতর সময় অতিবাহিত করছি। নির্বাচন খুব কাছাকাছি কাজেই এমন কোনো কার্যক্রমের সাথে সরকারের জড়িত হওয়া উচিৎ হবে না যেখানে মানুষের উদ্বেগ উৎকণ্ঠা আসতে পারে।”

    রাজনৈতিক সচেতন অনেকে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখেন। যারা প্রশিক্ষণ পাবেন তারা কোনো বিশেষ দলের সদস্য হয় কিনা- সেই ঝুঁকিও রয়েছে।

    উপদেষ্টা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। তার দাবি, এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কোনো বাহিনী গঠনেরও চেষ্টা হচ্ছে না।

    “আমরাতো রক্ষীবাহিনী করছি না। এবং আমরা লাইভরাউন্ড ফায়ারিং প্রশিক্ষণটাও দিচ্ছি না। ইতিমধ্যেতো বিএনসিসিতে লাইভরাউন্ড ফায়ারিং প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আমি নিজেও প্রশিক্ষণ নিয়েছি। এই যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এটা কোনো অভ্যন্তরীণ সংকট তৈরি করেছে। অনেক সময় এক্সট্রা সেনসিটিভ হয়ে যাই আমরা। এ ধরনের সংকট হবেনা বলে আমরা বিশ্বাস করি।”

    প্রাথমিকভাবে বিকেএসপির সাতটি আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এই আবাসিক প্রশিক্ষণ হবে। ১৫ দিনের এই প্রশিক্ষণ শেষে ৪২০০ টাকা ভাতা এবং থাকা খাওয়া ও পোশাক দেওয়া হবে। ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করে পরিকল্পনা পাশ হয়েছে। চারটা বিভাগে জুডো, কারাতে, তায়কোন্দ এবং শ্যুটিং- এই চারটা তিনদিন বা চারদিন করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

    বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের পর ভারত বিরোধী রাজনীতি জনপ্রিয় হয়েছে। আন্দোলনের নেতাদের বক্তব্যে গণপ্রতিরক্ষা, ভূরাজনীতি ও নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এসেছে। এ সময়ে আত্মরক্ষা ও অস্ত্র প্রশিক্ষণের উদ্যোগ একটা রাজনৈতিক জনপ্রিয়তা সৃষ্টির চেষ্টা হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

    সরকারের এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচী নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, আমি মনে করি এটা একটা রেটরিক।

    “আমাদের এখানে অনেকদিন ধরে বাগাড়ম্বরের রাজনীতি চলছে। কিছুদিন আগে জামায়াতে ইসলামী বলছিল যে, ভারতের সাথে যুদ্ধ লাগলে বা কেউ আক্রমণ করলে আমাদের পঞ্চাশ লাখ লোক দাঁড়ায় যাবে। তারপরে আমরা শুনলাম যে, আট হাজার প্রশিক্ষণ নেবে। তো পলিটিক্যাল পার্টির লোকেরা এগুলো বলে। আমার কাছে রেটরিকই মনে হয়। এগুলো দিয়ে রাজনীতি করা মানে এক ধরনের জিঙ্গুইজম করা মানে প্রচণ্ড রকমের উন্মাদনা সৃষ্টি করা রাজনীতিতে। এবং এটা করে হাততালি পাওয়া।”

    বিবিসি’র প্রতিবেদন

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    অপরাধ

    ডাক্তারের আড়ালে কোটি টাকার কর ফাঁকি

    November 2, 2025
    বাংলাদেশ

    রাজধানীতে অজ্ঞাত লাশের ঢল, বাড়ছে উদ্বেগ

    November 1, 2025
    বাংলাদেশ

    ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর সুন্দরবনে জলদস্যুদের পুনরুত্থান

    November 1, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সাউথইস্ট ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত

    আইন আদালত October 7, 2025

    ক্রেতারা ভারত-চীন ছাড়ছে, বাংলাদেশ পাচ্ছে অর্ডার

    অর্থনীতি August 15, 2025

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2025 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.