চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন বার্থ ও শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর নিয়োগ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এই স্থগিতাদেশ গত সপ্তাহে আদালতের একটি দ্বৈত বেঞ্চ জারি করেছে।
বন্দর বার্থ হ্যান্ডলিং অপারেটর এম এইচ চৌধুরী লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার ফজলে আকবর মুরাদ দায়ের করা রিট মামলায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, যুগ্ম সচিব, উপসচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, পরিচালক (পরিবহন) ও সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
বন্দর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগে দুই লাখ টন পণ্য হ্যান্ডলিংয়ের কাজ ছিল। বর্তমানে একই স্টিভিডোর ১৩ কোটি টন পণ্য এবং ৩৩ লাখ টিইইউ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করছে। প্রতিযোগিতামূলক দরে সেবা নিশ্চিত করতে বন্দর কর্তৃপক্ষ নতুন বার্থ ও শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছিল।
শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর ও বার্থ অপারেটর লাইসেন্সিং নীতিমালা–২০২৫ অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ চেয়ারম্যান বরাবরে আবেদন জমা দিতে হবে।
আবেদনে দেখাতে হবে, দেশের যে কোনো বন্দরে জাহাজ থেকে পণ্য বা কনটেইনার লোড–আনলোড করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কর্মী রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির সক্ষমতা যাচাই করতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উপকরণের প্রমাণও জমা দিতে হবে। এছাড়া জাহাজ মালিক, শিপিং কোম্পানি, চার্টারার, সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা কিংবা কাস্টমস অনুমোদিত শিপিং এজেন্টের সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনার চুক্তির প্রমাণও দিতে হবে।
আবেদনকারীর শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন, ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য আর্থিক দায় পরিশোধের সক্ষমতার প্রমাণ, জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট, আয়কর সনদ, ভ্যাট নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, শ্রমিকদের জন্য বীমা কভারেজ ও সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞতার সনদ জমা দিতে হবে। আবেদনকারী অবশ্যই বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে। লাইসেন্সের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে ১ লাখ টাকার অফেরতযোগ্য পে-অর্ডার জমা দিতে হবে। শেষ তারিখ ছিল ৩১ অক্টোবর এবং ইতোমধ্যে কিছু আবেদন জমা পড়েছে।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরের বার্থ হ্যান্ডলিং অপারেটর এম এইচ চৌধুরী লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী খোন্দকার ফজলে আকবর মুরাদের রিটের শুনানি শেষে ২৬ অক্টোবর হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ নতুন অপারেটর নিয়োগ তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখার আদেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত ৩০ সেপ্টেম্বর পরিচালক (পরিবহন) স্বাক্ষরিত নোটিশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে রুল জারি করেছেন এবং সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে চার সপ্তাহের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট নিয়াজ মুর্শেদ। বিবাদীদের পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ শফিকুর রহমান, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মহিউদ্দিন মোহাম্মদ হানিফ, একরামুল কবির ও শেখ মোহাম্মদ ফয়জুল ইসলাম।

