বাংলাদেশের মানুষ সংঘর্ষ নয়, স্থিতিশীল রাজনীতি দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রতিবাদের অধিকার সবার থাকলেও একে অপরের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন জরুরি।
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ট্রেস কনসালটেন্সির উদ্যোগে আয়োজিত ‘প্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা’ শীর্ষক সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, “কথায় কথায় আপনি রাস্তায় যাবেন। এখন অন্য দল যদি তার প্রতিবাদে রাস্তায় নামে, তাহলে সংঘর্ষ হবেই। বৃহত্তর কোনো দল যদি প্রতিবাদে নামে, তাহলে সংঘর্ষ এড়ানো যাবে না। আমরা কি শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছি সংঘর্ষের জন্য?”
তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো একধরনের ‘অবসেশনে’ ভুগছে। কিছু রাজনীতিবিদের মধ্যে এ ধরনের মনমানসিকতা তৈরি হয়েছে, যা গণতন্ত্রের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোকে বুঝতে হবে—যতটুকু ঐকমত্য হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে নতুন ইস্যু তোলা মানে সেই ঐকমত্যের প্রতি অসম্মান দেখানো। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও ঐকমত্য থাকতে হবে।”
তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৭ বছরের শাসনে দেশে এক ধরনের স্বৈরাচারী মনোভাব তৈরি হয়েছে। এখন অনেকেই মনে করেন, ‘আমার দাবি বা আমার চিন্তা না হলে তা গ্রহণযোগ্য নয়’, যা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির পরিপন্থী।
আমীর খসরু বলেন, ঐকমত্যের বাইরে কোনো বিষয় জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে, যাতে তারাই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংবিধানে গণভোটের বিধান নেই। তাই সংসদের মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে তা পাস করতে হবে, তারপরই গণভোট হতে পারে।
তিনি আরো দাবি করেন, কেউ কেউ এসব ইস্যু তুলে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডে সন্ত্রাসীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে নির্বাচনের সময়সূচি পিছিয়ে দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ট্রেস কনসালটেন্সির প্রধান নির্বাহী ফুয়াদ এম খালিদ হোসেন। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ সেন্টার ফর ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্সের নির্বাহী পরিচালক শাহাব এনাম খান। এতে আরো বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ও ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম।

