চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের মধ্যে বিরোধ তদন্ত করবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় গত রোববার দুই সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, কমিটির প্রধান করা হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সুরাইয়া আখতার জাহানকে। সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন উপসচিব মো. ফিরোজ মাহমুদ।
প্রাপ্ত অফিস আদেশ অনুযায়ী, কমিটি মেয়রের পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বদলিপত্র এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার যোগদানপত্রসহ সার্বিক বিষয়গুলো তদন্ত করবে। তবে অফিস আদেশে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারিত হয়নি।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, মেয়র শাহাদাত হোসেন ২ নভেম্বর বর্তমান সিইওকে বদলির জন্য পত্র দিয়েছেন। এদিকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ৩০ অক্টোবর স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন, তিনি ছুটি শেষে যোগদান করতে চাইলে বাধা দেওয়া হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন এই কমিটি গঠনের বিষয় নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ পেয়েছেন।
দুই শীর্ষ কর্মকর্তা দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বে জড়িত। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম দেড় মাসের উচ্চতর প্রশিক্ষণের ছুটিতে ছিলেন। তবে ২২ অক্টোবর ছুটি শেষে যোগদানের সময় তাঁর যোগদানপত্র গ্রহণ করেননি মেয়র। তাঁর পরিবর্তে সচিব মো. আশরাফুল আমিনকে ভারপ্রাপ্ত সিইও নিয়োগ দেওয়া হয়।
মেয়র লন্ডন সফরে থাকায় প্রশাসনিক কার্যক্রম সচিব তদারক করবেন। তবে মেয়র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার যোগদানপত্র গ্রহণ না করায় ২২ অক্টোবর অফিস আদেশ জারি করা হয়। এতে সব বিভাগীয় প্রধানকে সচিবের মাধ্যমে নথি অনুমোদনের জন্য মেয়রের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
পরিস্থিতির মধ্যে, ২৭ অক্টোবর মেয়র শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। এটি সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে প্রথম। নোটিশে বলা হয়, দুটি প্রতিষ্ঠানের গৃহকর জালিয়াতি তদন্তে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে হবে। তবে সোমবার পর্যন্ত তিনি জবাব দেননি।
এরপর, ৩০ অক্টোবর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল সমর্থিত শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন সাত দিনের মধ্যে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে অপসারণের দাবিতে সিটি করপোরেশন কার্যালয় ঘেরাও করে। এর পর থেকে শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম অফিসে আসছেন না।

