রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের চার জেলায় বুধবার দিবাগত রাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত অন্তত পাঁচটি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে দুটি ঘটনা ঘটেছে ঢাকায় এবং বাকি তিনটি মুন্সিগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও গোপালগঞ্জে। তবে এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্তব্যরত কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমকে জানান, গত রাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিকভাবে এসব অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। প্রত্যেকটি ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের স্থানীয় ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বর ডিওএইচএস এলাকায়। সেখানে থেমে থাকা একটি যাত্রীবাহী বাসে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট প্রায় ২০ মিনিট চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও এর আগেই বাসটি সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়।
দ্বিতীয় ঘটনা ঘটে রাত পৌনে তিনটার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনের সামনে। সেখানে একটি হিউম্যান হলার বা লেগুনায় আগুন দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট গিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।
এছাড়া রাত আড়াইটার দিকে টাঙ্গাইলের রাওয়াইল এলাকায় থেমে থাকা একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। বাসটিতে কেউ না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ফায়ার সার্ভিসের স্থানীয় ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার পর মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় একটি পেপার মিলের সামনে পার্ক করা ট্রাকে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। দ্রুত খবর পেয়ে গজারিয়া ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা আগুন নেভান।
শেষ ঘটনা ঘটে ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে গোপালগঞ্জে। জেলা গণপূর্ত কার্যালয়ের সামনে থেমে থাকা একটি পিকআপে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই পিকআপটি সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, এসব ঘটনায় কে বা কারা জড়িত তা এখনো জানা যায়নি। তবে সব ক্ষেত্রেই একই ধরনের পদ্ধতিতে রাতে থেমে থাকা যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে, যা পরিকল্পিত অগ্নিসংযোগের ইঙ্গিত দেয়।
উল্লেখ্য, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের অনলাইনে ঘোষিত ১৩ নভেম্বরের ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচিকে ঘিরে গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, এসব ঘটনার পেছনে যারা জড়িত তাদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তৎপরতা চলছে।

