সারা দেশের সব আদালত প্রাঙ্গণ ও বিচারকদের বাসস্থানে নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবি নিয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। গতকাল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনূস আলী আকন্দ এ রিট দায়ের করেন। এতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা বিবাদী করা হয়েছে।
অ্যাডভোকেট ইউনূস আলী আকন্দ জানান, ‘চলতি সপ্তাহে বিচারপতি শিকদার মো. মাহমুদুর রাজীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটটির ওপর শুনানি হতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘বিচারকদের বাসস্থান ও আদালত অঙ্গনে নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং তাদের প্রাইভেসি রক্ষার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়েছে। রাজশাহীর বিচারকের স্ত্রীর জিডির বিষয়ে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় তা রিটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’ রিট আবেদনে পুলিশের মহাপরিদর্শক, রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার এবং সিলেটের জালালাবাদ থানার ওসিকে আদালতে হাজির করার নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
এর আগে ১৩ নভেম্বর রাজশাহীর তেরখাদিয়া ডাবতলা এলাকায় মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের বাসায় লিমন মিয়া নামে এক ব্যক্তি বিচারকের ছেলে তাওসিফ রহমান (১৫) কে ছুরিকাঘাত ও শ্বাসরোধে হত্যা করেন। ওই ঘটনায় বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসিও (৪৪) আহত হন। ১৪ নভেম্বর রাজপাড়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন বিচারক মোহাম্মদ আব্দুর রহমান। উল্লেখ্য, হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহ আগে তাসমিন নাহার লুসি সিলেটের জালালাবাদ থানায় নিরাপত্তা চেয়ে একটি জিডি করেছিলেন।
এই ঘটনায় বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন দাবি জানিয়েছে, বিচারকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ পুলিশ সদস্য এবং গ্রেফতারকৃত আসামিকে মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করে অপেশাদারিত্ব প্রদর্শনের দায়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তারা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে ১৬ নভেম্বর থেকে সারা দেশের বিচারকেরা কলমবিরতি পালন হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
পরবর্তীতে শনিবার আদালত, বিচারকের বাসস্থান ও যাতায়াতের সময় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী নিযুক্তসহ দুই দাবি পূরণের আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। তবে এ ঘটনায় দেশে বিচারকদের কালো ব্যাজ ধারণ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

