মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ সোমবার। ১৯৭৬ সালের এই দিনে ঢাকার পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন এবং তাকে টাঙ্গাইলের সন্তোষে দাফন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে তার পরিবার, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মুরিদান, ভক্ত, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটি পালন করছে। ভাসানী ফাউন্ডেশন ও খোদা-ই-খেদমতগারের উদ্যোগে সাত দিনব্যাপী ‘ভাসানী মেলা’ আয়োজন করা হয়েছে।
মওলানা ভাসানী তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের অধিকার রক্ষায় আজীবন সংগ্রাম করেছেন। ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের সয়া-ধানগড়া গ্রামে জন্ম নেওয়া ভাসানী ১৯০৩ সালে বিপ্লবী চেতনার সঙ্গে পরিচিত হন এবং ১৯০৭ সালে ইসলামি শিক্ষার উদ্দেশ্যে দেওবন্দ মাদ্রাসায় যোগ দেন। ১৯১৭ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে আসেন। ১৯২৩ সালে ‘স্বরাজ্য পার্টি’ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯২৬ সালে আসামে কৃষক-প্রজা আন্দোলন শুরু এবং ১৯২৯ সালে ধুবড়ীর ভাসান চরে কৃষক সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে ‘ভাসানী’ উপাধি অর্জন করেন।

তিনি বাংলা-আসাম প্রদেশ মুসলিম লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠনে অগ্রণী ভূমিকা নেন এবং ১৯৫৭ সালের কাগমারী সম্মেলনে পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্যের বিরুদ্ধে তার ‘খামোশ’ উচ্চারণ রাজনৈতিক ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে ওঠে। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তিনি দেশব্যাপী ‘মজলুম জননেতা’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সাধারণ মানুষ মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। অনেকেই কয়েক দিন আগে থেকেই সন্তোষে এসে অবস্থান নিয়েছেন।
স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতার দাবি মওলানা ভাসানী রাজনৈতিক কর্মসূচিতে প্রথম সামনে তুলে ধরেছিলেন। তার নেতৃত্বে পূর্ববাংলার মানুষ আত্মনিয়ন্ত্রণের দাবি শক্তভাবে উপস্থাপন করায় স্বাধীনতার সংগ্রাম ত্বরান্বিত হয়।

