জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে ভারতের কাছে আবারো চিঠি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। সোমবার (১৭ জুলাই) সচিবালয়ে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
আইন উপদেষ্টা বলেন, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে ভারতকে পুনরায় চিঠি দেওয়া হবে। তিনি অভিযোগ করেন, ভারত যদি এই ‘গণহত্যাকারীকে’ আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত রাখে, তবে তা বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও জনগণের প্রতি শত্রুতা এবং নিন্দনীয় আচরণ হিসেবে বিবেচিত হবে।
তিনি আরো জানান, আজ যে রায় হয়েছে তার মাধ্যমে ন্যায়বিচারের প্রক্রিয়া অগ্রসর হয়েছে এবং সরকার যতদিন দায়িত্বে থাকবে বিচার কার্য দ্রুত গতিতে চালিয়ে যাবে।
রায়ের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অভিনন্দন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আগামীতে যে সরকারই দায়িত্ব নিক, এই বিচারের গুরু দায়িত্ব থেকে যেন কোনো অবস্থাতেই পিছু হটে না।
‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আরেকটি বিজয়ের দিন’-
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আজকের দিনটিকে তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আরেকটি বিজয়ের দিন হিসেবে দেখছেন। তিনি বিশেষভাবে স্মরণ করেন সেই আন্দোলনে নিহতদের, যাদের আত্মত্যাগ দেশবাসীর মনে এখনও গভীরভাবে অনুরণিত।
তিনি বলেন, শত শত মানুষ নিহত হওয়া, হাজারো মানুষের গুরুতর আহত হওয়া বা অঙ্গহানি ঘটানো নৃশংস হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ ন্যায়বিচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
তিনি উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার পাশাপাশি তার প্রধান সহযোগী ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তার মতে, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিপুল ও স্পষ্ট প্রমাণ থাকার কারণে এই রায় তাকে বিস্মিত করেনি, বরং তা স্বাভাবিক বিচার প্রক্রিয়ারই ফল।
উপদেষ্টা বলেন, জুলাই আন্দোলনের নিহত আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, ইয়ামিন, আনাসসহ সবাইকে স্মরণ করে তার মনে হয়েছে আজকের রায় তাদের বিদেহী আত্মার জন্য সামান্য হলেও শান্তির বার্তা আনতে পারে। একইসঙ্গে শোকাহত পরিবারগুলোও হয়তো এই রায়ের মাধ্যমে কিছুটা সান্ত্বনা পাবে।

