শুক্রবার দেশের বিভিন্ন অংশে হঠাৎ ভূমিকম্প অনুভূত হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার সেই ভূমিকম্পের আফটারশক আরও দুইবার অনুভূত হয়। এই পরিস্থিতিতে ভুল তথ্য ও অপ্রয়োজনীয় আতঙ্ক অনেক দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজের প্রভাষক জাওয়াদ ইবনে ফরিদ বলেন, “ভূমিকম্প প্রতিরোধে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে বিভ্রান্তি ও অপতথ্য।” তিনি সতর্ক করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ‘ভূমিকম্প পূর্বাভাস’ বিশ্বাস করলে মানুষ তাড়াহুড়ো করে ভবন ছাড়তে গিয়ে আহত হতে পারেন।
তিনি ভূমিকম্প চলাকালীন ডিসিএইচ (DROP, COVER, HOLD) পদ্ধতি অনুসরণের পরামর্শ দেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফেমা (FEMA) থেকেও এমনই করণীয় নিয়ে চেকলিস্ট প্রকাশ করা হয়েছে।
ভূমিকম্পের সময় করণীয়
মাটি কাঁপা শুরু হলে:
-
অপ্রয়োজনীয় নড়াচড়া কমান।
-
দ্রুত কাছের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিন।
-
ঝাঁকুনি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এবং বাইরে যাওয়া নিরাপদ কিনা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ঘরের ভিতর থাকুন।
যদি ঘরের ভিতরে থাকেন:
-
মজবুত ডেস্ক, টেবিল বা বেঞ্চের নিচে আশ্রয় নিন।
-
আসবাবপত্র না থাকলে, দেয়ালের পাশে বসে মাথা ও মুখ হাত দিয়ে ঢেকে ধরুন।
-
কাচ, জানালা, লাইট ফিক্সচার বা উঁচু আসবাবপত্র থেকে দূরে থাকুন।
-
এলিভেটর বা লিফট ব্যবহার করবেন না।
-
বিছানায় থাকলে মাথা বালিশ দিয়ে ঢেকে রাখুন, যদি না সম্ভব হয়, মেঝেতে আশ্রয় নিন।
-
ভবন থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করবেন না; বেশিরভাগ আহত হয় বাইরে বের হয়ে।
-
বিদ্যুৎ, পানি পাইপ বা অ্যালার্ম বিপজ্জনক হতে পারে, সতর্ক থাকুন।
যদি বাইরে থাকেন:
-
ভবন, গাছ, স্ট্রিটলাইট বা বৈদ্যুতিক তার থেকে দূরে থাকুন।
যদি গাড়িতে থাকেন:
-
নিরাপদ জায়গায় গাড়ি থামান, ভেতরে থাকুন।
-
ভবন, গাছ, ওভারপাস বা বৈদ্যুতিক তারের নিচে গাড়ি থামাবেন না।
-
ক্ষতিগ্রস্ত সেতু বা ওভারপাসে গিয়ে যাওয়া যাবে না।
-
ভূমিকম্প থামার পর সতর্ক হয়ে চলাচল করুন, রাস্তা বা সেতুর ফাটল খেয়াল করুন।
যদি ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েন:
-
আগুন জ্বালাবেন না।
-
নাক ও মুখ রুমাল বা কাপড় দিয়ে ঢেকে নড়াচড়া কম করুন।
-
উদ্ধারের জন্য শব্দ করতে পাইপ বা দেয়ালে ধাক্কা দিন।
-
শেষ উপায়ে চিৎকার করুন; ধুলো শ্বাসনালিতে ঢোকার ঝুঁকি থাকে।

