একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের পরিকল্পনার কারণে ভোট গ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আসন্ন রোববারের ইসি সভাতেই সময় বাড়ানো হবে কি না এবং নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক তফসিল কবে ঘোষণা করা হবে—এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। কমিশনের লক্ষ্য, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই তফসিল ঘোষণা করা।
অন্তর্বর্তী সরকার আগেই জানিয়েছে, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং একই সঙ্গে জুলাই সনদ নিয়ে গণভোটও হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন ইঙ্গিত দিয়েছেন, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।
ইসি–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। ৭ থেকে ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে তফসিল ঘোষণার পরিকল্পনা রয়েছে। এবার তফসিল ঘোষণার পর ভোটের দিন পর্যন্ত প্রায় দুই মাস সময় রাখা হবে। ফলে ভোট গ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ ধরা হচ্ছে ৫ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। আগামী রোববারের বৈঠকেই বিষয়টি পাকাপাকি ঘোষণা করা হবে।
শুরুতে শুধু সংসদ নির্বাচনের জন্যই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে দেশে ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্র এবং ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি ভোটকক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু গণভোট যুক্ত হওয়ায় ভোটারদের দুটি ব্যালট দিতে হবে, যা স্বাভাবিকভাবেই সময় বৃদ্ধি করবে।
গত শনিবার ঢাকার একটি কেন্দ্রে মক ভোটের মাধ্যমে ইসি পরীক্ষা করে দেখেছে—প্রতিটি ভোটকক্ষে দুইটি গোপন কক্ষ করলে কেন্দ্র বাড়ানোর প্রয়োজন নাও হতে পারে। তবে দেশের অনেক স্থানে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে, পর্যাপ্ত অবকাঠামো নেই। নতুন কেন্দ্র স্থাপনেও সীমাবদ্ধতা থাকায় ইসি সময়সীমা বাড়ানোর দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
সাধারণ নিয়মে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ করা হয়। এবার প্রস্তাব এসেছে সেই সময় বাড়িয়ে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত করার। ফেব্রুয়ারির কুয়াশা, কম আলো এবং দুই ধরনের ব্যালটের অতিরিক্ত চাপ—সব বিবেচনায় রেখেই আলোচনা চলছে।
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, সময় বাড়ানো ও তফসিল ঘোষণার মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো রোববারের সভাতেই চূড়ান্ত করা হবে।

