জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) জানিয়েছে, গত নভেম্বরে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কর্মী প্রেরণ ২৮ শতাংশ বেড়েছে। মূল কারণ হিসেবে সৌদি আরবের শ্রমবাজারে দক্ষতার মানদণ্ড পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট আবেদন জট কমে আসা উল্লেখ করা হচ্ছে।
যদিও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার প্রেরণ ৩ শতাংশ কম। বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে ৯৯ হাজার ৮৭৪ জন কর্মী বিদেশে গেছেন, যেখানে অক্টোবরের সংখ্যা ছিল ৭৮ হাজার ২৭ জন। এর মধ্যে ৬৪ হাজার ৬০৫ জন কর্মী সৌদি আরবে গেছেন, যা শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অভ ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজ (বায়রা)-এর সাবেক মহাসচিব শামীম হোসেন চৌধুরী বলেন, “তাকামুল প্রোগ্রামের কারণে শুরুতে নিয়োগ প্রক্রিয়া ধীরগতিতে চলেছিল। বিএমইটির সক্ষমতা বাড়ার ফলে ধীরে ধীরে আবেদন জট খুলতে শুরু করেছে।”
এ প্রোগ্রামের আওতায় স্বল্প-দক্ষ কর্মীদের জন্য দক্ষতার সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়। সম্প্রতি বাংলাদেশের অনুরোধে পরিচ্ছন্নতা পদের জন্য শর্ত সাময়িকভাবে শিথিল করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিক হিসাবমতে, বর্তমানে সৌদি আরবে ৩২ লাখের বেশি বাংলাদেশি কর্মী রয়েছেন। এদের ৮০ শতাংশ স্বল্প-দক্ষ পেশায় নিয়োজিত, যেমন পরিচ্ছন্নতা, নির্মাণ ও গৃহস্থালি কাজ। গড় মাসিক আয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা।
বর্তমানে দেশে বিএমইটি পরিচালিত ১১০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) আছে, যার মধ্যে ২৬টি কেন্দ্রে ৭৩টি ট্রেড বা পেশার জন্য এসভিপি পরীক্ষা নেওয়ার অনুমোদন রয়েছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় ৫২ হাজার পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
নভেম্বরে অন্যান্য প্রধান শ্রমবাজারে নিয়োগ তুলনামূলক কম ছিল। কাতার, সিঙ্গাপুর, মালদ্বীপ ও কুয়েতে কর্মী নিয়োগ ২,৯৯৬ থেকে ৯,১৬০ জনের মধ্যে। মালয়েশিয়া, ওমান ও বাহরাইনের মতো ঐতিহ্যবাহী বাজারে কার্যত কর্মী পাঠানো বন্ধ রয়েছে। ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে পর্তুগাল ও ইতালিতে ৭০০-এর বেশি কর্মী নিয়োগ পেয়েছেন।
রেমিট্যান্স প্রবাহেও বড় উল্লম্ফন দেখা গেছে। নভেম্বর মাসে প্রবাসীরা ২.৮৯ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন, যা গত বছরের ২.২০ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ৩১.৩৭ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এটি চলতি বছরের তৃতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, হুন্ডির দৌরাত্ম্য কমা ও ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীল হওয়ার কারণে প্রবাহ বেড়েছে।

