বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ফেব্রুয়ারির সংসদ নির্বাচনের পর তার মেয়াদের মাঝপথেই পদত্যাগের পরিকল্পনা করছেন বলে একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মি. সাহাবুদ্দিনের বরাত দিয়ে রয়টার্সের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি জানিয়েছেন যে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কারণে তিনি অপমানিত বোধ করছেন।
রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিন সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হলেও এই পদটি মূলত আনুষ্ঠানিক। নির্বাহী ক্ষমতা প্রধানত প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার হাতে।
তবে তার অবস্থান গুরুত্ব পায় যখন গণঅভ্যুত্থানের মুখে ১৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের পাঁচই অগাস্ট ভারতে চলে যান এবং সংসদ বিলুপ্ত হওয়ার পর একমাত্র সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে রাষ্ট্রপতিই থেকে যান।
৭৫ বছর বয়সী মি. সাহাবুদ্দিন ২০২৩ সালে পাঁচ বছরের মেয়াদের জন্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে। দলটি আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষিদ্ধ হয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার সরকারি বাসভবন থেকে হোয়াটসঅ্যাপে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মি. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, “আমি চলে যেতে আগ্রহী। আমি বেরিয়ে যেতে চাই”।
“নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমি থাকব। আমি সাংবিধানিকভাবে নির্ধারিত রাষ্ট্রপতির পদ ধরে রেখেছি,”বলেন তিনি।
এটি দায়িত্ব গ্রহণের পর গণমাধ্যমে দেওয়া তার প্রথম সাক্ষাৎকার বলেও প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে।

মো. সাহাবুদ্দিনের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, মুহাম্মদ ইউনূস প্রায় সাত মাস ধরে তার সঙ্গে দেখা করেননি, রাষ্ট্রপতির প্রেস বিভাগ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং সেপ্টেম্বর মাসে বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে তার প্রতিকৃতি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
“প্রেসিডেন্টের ছবি সব কনস্যুলেট, দূতাবাস ও হাইকমিশনে ছিল, আর এক রাতে হঠাৎ তা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এতে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যায় যে হয়তো প্রেসিডেন্টকে সরিয়ে দেওয়া হবে। আমি খুবই অপমানিত বোধ করেছি,” রাষ্ট্রপতির বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মি. সাহাবুদ্দিন আরো জানান, তিনি প্রতিকৃতি নিয়ে মি. ইউনূসকে লিখেছেন, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, “আমার কণ্ঠরোধ করা হয়েছে”- তিনি যোগ করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস কর্মকর্তারা মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি বলেও রয়টার্স জানিয়েছে।
সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলেও রয়টার্সকে জানিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি।

