বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারের হার প্রায় সর্বজনীন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশের ৯৮.৯ শতাংশ পরিবারে মোবাইল ফোন ব্যবহৃত হচ্ছে।
বিবিএস প্রকাশিত ‘আইসিটি প্রয়োগ ও ব্যবহার জরিপ ২০২৫–২৬’ (প্রথম প্রান্তিক: জুলাই–সেপ্টেম্বর ২০২৫) প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২৩ সালে খানাভিত্তিক মোবাইল ফোন ব্যবহারের হার ছিল ৯৭.৯ শতাংশ। সর্বশেষ জরিপে সেই হার আরো বেড়েছে। এতে তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ সুবিধায় ধারাবাহিক অগ্রগতির চিত্র ফুটে উঠলেও কিছু ক্ষেত্রে ধীরগতির প্রবণতাও স্পষ্ট হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিধি বাড়লেও কম্পিউটার ব্যবহারের হার এখনও এক অঙ্কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ২০২৩ সালে যেখানে ৮.৯ শতাংশ খানায় কম্পিউটার ছিল, ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে তা সামান্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯.১ শতাংশে।
স্মার্টফোন ব্যবহারের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে গত কয়েক বছরে। ২০২৩ সালে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর হার ছিল ৬৩.৩ শতাংশ। ২০২৪–২৫ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭২.৮ শতাংশে। তবে ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে এই হার সামান্য কমে ৭২.৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
অন্যদিকে টেলিভিশন ব্যবহারের ক্ষেত্রে ধারাবাহিক পতন লক্ষ্য করা গেছে। ২০২৩ সালে ৬২.২ শতাংশ খানায় টেলিভিশন থাকলেও ২০২৪–২৫ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ৫৯.৬ শতাংশে। ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে এই হার আরো কমে ৫৮.৯ শতাংশে নেমেছে।
ইন্টারনেট ব্যবহারে বড় ধরনের উল্লম্ফন দেখা গেছে। ২০২৩ সালে যেখানে ৪৩.৬ শতাংশ খানায় ইন্টারনেট সুবিধা ছিল, ২০২৪–২৫ অর্থবছরে তা বেড়ে ৫৫.১ শতাংশে পৌঁছায়। ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ইন্টারনেট সুবিধাসম্পন্ন খানার হার আরো বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬.২ শতাংশে।
বিদ্যুৎ সুবিধার ক্ষেত্রে কভারেজ প্রায় সর্বজনীন অবস্থায় রয়েছে। ২০২৩ সালে ৯৯.১ শতাংশ খানায় বিদ্যুৎ সুবিধা থাকলেও ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে এই হার দাঁড়িয়েছে ৯৮.৯ শতাংশে। সামান্য ওঠানামা হলেও উচ্চমাত্রার সুবিধা বজায় আছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের দ্রুত বিস্তার মানুষের গণমাধ্যম ব্যবহারের ধরনে পরিবর্তন আনছে। এর প্রভাব টেলিভিশন ব্যবহারের ক্রমহ্রাসে প্রতিফলিত হচ্ছে। একই সঙ্গে ডিজিটাল অর্থনীতি ও ই-গভর্ন্যান্স কার্যক্রম এগিয়ে নিতে কম্পিউটার ব্যবহার ও ব্রডব্যান্ডভিত্তিক সংযোগ বাড়ানোর দিকে নীতিগতভাবে আরও মনোযোগ দেওয়া জরুরি বলে তারা মনে করছেন।

