২০২৬ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষাকে ঘিরে একের পর এক চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে। গত বছর শিক্ষাক্রম বাতিলের কারণে শুধু দশম শ্রেণির সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে এবার নতুন বাধা হিসেবে সামনে এসেছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন, পবিত্র রমজান এবং ঈদুল ফিতরের ছুটি। এসব কারণে পরীক্ষা অন্তত তিন মাস পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। কিন্তু ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে সেই সময় পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়। নির্বাচনের পরপরই শুরু হবে রমজান মাস, যা আরেকটি বড় প্রতিবন্ধকতা। রোজা এবং ঈদুল ফিতরের সময়ে পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া কার্যত বাস্তবসম্মত নয়।
এসএসসি, এইচএসসি সহ সব পাবলিক পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ করে বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। কমিটির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার, রোববার (২১ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমকে বলেন, “পরীক্ষার নির্দিষ্ট তারিখ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে ফেব্রুয়ারিতে পরীক্ষা নেওয়ার সুযোগ নেই, এটা সবাই বুঝবেন।”
তিনি আরও বলেন, এবারই প্রথম দেরিতে এসএসসি পরীক্ষা হচ্ছে না। বিশেষ পরিস্থিতিতে আগেও পরীক্ষা দেরিতে নেওয়া হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি করোনাভাইরাস পরিস্থিতি উল্লেখ করেন। সেই সময়ও শিডিউলে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছিল।
গত পাঁচ বছরের দিকে তাকালে দেখা যায়, এসএসসি পরীক্ষার সময়সূচিতে অস্বাভাবিকতা এক নতুন ঘটনা নয়। ২০২০ সালের আগে পরীক্ষা সাধারণত ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শুরু হয়ে মার্চের মধ্যেই শেষ হতো। কিন্তু ২০২১ সালে করোনার কারণে পরীক্ষা শুরু হয় ১৪ নভেম্বর। এরপর ২০২২ সালে শুরু হয় ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সালে ৩০ এপ্রিল। ২০২৪ সালে কিছুটা স্বাভাবিক সময়ে ফিরে আসে পরীক্ষা, ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। ২০২৫ সালে আবারও শিডিউল পিছিয়ে ১০ এপ্রিল থেকে পরীক্ষা শুরু করা হয়।
২০২৬ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফরম পূরণ ৩১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে। ফরম পূরণ চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত, আর ফি জমা দেওয়া যাবে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত। তবে পরীক্ষা কবে শুরু হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার জানিয়েছেন, চলতি বা আগামী সপ্তাহের মধ্যে বৈঠক হয়ে সময়সূচি চূড়ান্ত করা হবে। তিনি বলেন, “ঈদুল ফিতর মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে। ছুটি শেষে এপ্রিলের শুরুতে পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণের সুযোগ আছে। এক মাস ১০ দিনের মতো সময় ধরে পরীক্ষা নেওয়া হলে ঈদুল আজহার আগেই পরীক্ষা শেষ করা সম্ভব হবে কিনা, সেটাও বিবেচনা করা হবে।”
সব দিক মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদের সুবিধা ও পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে, শিগগিরই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

