দেশের প্রায় ৯৫.৪ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ৮৭.৫ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে উন্নত পানির উৎসের সুবিধা রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
তবে ‘বেসিক ওয়াটার সার্ভিস’ সংজ্ঞা অনুযায়ী, যেখানে পানি উৎসটি অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের সীমানার ভেতরে থাকতে হবে, সে ক্ষেত্রে এই হার তুলনামূলকভাবে কম—৮৬.১ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ৭০.৫ শতাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্র এ মানদণ্ড পূরণ করে।
রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে আয়োজিত ‘ওয়াশ ইন এডুকেশন অ্যান্ড হেলথকেয়ার ফ্যাসিলিটিজ সার্ভে ২০২৪’ অনুষ্ঠানে এসব ফলাফল প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তার।
জরিপে দেশের আটটি বিভাগ ও ৬৪ জেলা থেকে সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয় ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ৯০.৬ শতাংশ স্কুল এবং ৯৮.৫ শতাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অন্তত একটি টয়লেট আছে। তবে গুণমান, পর্যাপ্ততা এবং ব্যবহারযোগ্যতার ক্ষেত্রে পার্থক্য লক্ষ্য করা গেছে।
অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকলেও পানি ও সাবানের অভাব রয়েছে। ফলস্বরূপ, মাত্র ৫১.৭ শতাংশ স্কুল এবং ৫ শতাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ‘বেসিক হ্যান্ডওয়াশিং’ সেবার মানদণ্ড পূরণ করতে পেরেছে।
বিদ্যালয়ে কিশোরী শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ও আলাদা শৌচাগার রয়েছে মাত্র ২০.৭ শতাংশ বিদ্যালয়ে, এবং মৌলিক মাসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে মাত্র ৬.৯ শতাংশ।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দেখা গেছে, ৭৮.৩ শতাংশ স্কুলে কঠিন বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা থাকলেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এর হার মাত্র ২৫.৪ শতাংশ। ৪১.৬ শতাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে খোলা জায়গায় বর্জ্য পোড়ানো হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
গত ১২ মাসে ২৪ শতাংশ বিদ্যালয় এবং ১৯.৪ শতাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য উপযোগী পানি উৎস রয়েছে ৫৫.৪ শতাংশ স্কুলে এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৪০.৯ শতাংশ।
মৌলিক ‘ওয়াশ’ খাতের জন্য বাজেট বরাদ্দ সীমিত—মাত্র ১১.১ শতাংশ স্কুল এবং ৩৪.৯ শতাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। এছাড়া, মাত্র ২৮.৬ শতাংশ স্কুল আন্তর্জাতিক সুপারিশকৃত মান অনুযায়ী প্রতি ৫০ শিক্ষার্থীর জন্য একটি উন্নত শৌচাগার নিশ্চিত করতে সক্ষম।
বিবিএস সতর্ক করেছে, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, পরিকল্পনা উন্নয়ন এবং জলবায়ু-সহনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ওয়াশ ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব না দিলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মৌলিক পানি ও স্যানিটেশন সেবা অপর্যাপ্ত থেকে যাবে, যা দীর্ঘমেয়াদে জনস্বাস্থ্য এবং শিক্ষার ওপর প্রভাব ফেলবে।

