রাজধানীর তেজগাঁও থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায়। মামলা করা হয় গতকাল রোববার দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে। মামলা সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনা ঘটেছিল গত বৃহস্পতিবার রাত। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয় হামলার শিকার হয়। দুষ্কৃতকারীরা ভাঙচুর, লুটপাট এবং আগুন দিয়ে অফিস পুড়িয়ে দেয়। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, দাঙ্গা সৃষ্টি করে অবৈধভাবে কার্যালয়ে ঢুকে তারা লুটপাট, ক্ষতি করা, হত্যার উদ্দেশ্যে অগ্নিসংযোগ, ভয় দেখানো এবং অপরাধের প্রমাণ নষ্টের চেষ্টা করে। প্রথম আলো প্রকাশনা বন্ধ ও অফিসের কাজে বাধা দিতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের পাশাপাশি অনলাইনে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে নির্দেশনা দেওয়ারও অভিযোগ আনা হয়েছে। হামলার সময় শুধু লুটপাট করা সম্পদের মূল্য ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩২ কোটি টাকা।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে ২০–৩০ জন অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী দেশীয় অস্ত্র, লাঠি এবং দাহ্য পদার্থ নিয়ে মিছিল করে কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে। পুলিশ বাধা দিলে তারা বেআইনিভাবে সমবেত হয়ে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী স্লোগান দেয়। তারা বিভিন্ন জায়গায় ফোন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে আরও মানুষ জড়ো করে। হামলার জন্য উসকানিমূলক পোস্টও দেওয়া হয়।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০০–৫০০ জন দুষ্কৃতকারী কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়। রাত ১১টা ৫০ মিনিটে তারা ফটকের কাচ ও শাটার ভেঙে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। ভবনের সামনের কাচ ভেঙে আসবাব, মালপত্র ও নথিপত্র নিচে ফেলে আগুন ধরানো হয়।
দুষ্কৃতকারীরা বিভিন্ন তলার প্রায় দেড় শত কম্পিউটার, ল্যাপটপ, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, লকারে রাখা টাকা ও প্রকাশনার বইপত্র লুট করে নিয়ে যায়। তারা অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নষ্ট করে ফেলে এবং সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে সাক্ষ্যপ্রমাণ নষ্টের চেষ্টা করে। ফায়ার সার্ভিসকেও আগুন নেভাতে বাধা দেওয়া হয়। এই হামলার সিসিটিভি ফুটেজ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের ভিডিও ফুটেজে ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

