সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় প্রতিরক্ষা সক্ষমতা রক্ষায় বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) কর্তৃক বেসামরিক পণ্য উৎপাদন বন্ধের দাবিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
গতকাল (রোববার) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান জনস্বার্থে সরকারের সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তাদের বরাবর রেজিস্ট্রি ডাক ও ইমেইলের মাধ্যমে নোটিশটি প্রেরণ করেন।
নোটিশে বলা হয়, সামরিক বাহিনীর স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও প্রতিরক্ষা শক্তি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত বিএমটিএফ-এর মূল দায়িত্ব হলো সামরিক সমরাস্ত্র, সরঞ্জাম ও প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও উৎপাদন। কিন্তু বাস্তবে প্রতিষ্ঠানটি চেয়ার, টেবিল, বিছানা, আলমারি, জুতা, ডিটারজেন্ট পাউডারসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক পণ্য উৎপাদন ও বিপণনে জড়িয়ে পড়েছে। এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আইনি নোটিশে বলা হয়, একটি কৌশলগত সামরিক প্রতিষ্ঠান যখন তার জনবল, প্রযুক্তি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবহার করে সাধারণ বাণিজ্যিক পণ্য উৎপাদনে মনোযোগ দেয়, তখন তা ১৯৫২ সালের আর্মি অ্যাক্টের উদ্দেশ্য এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার নীতির পরিপন্থী।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, রাষ্ট্রীয় অর্থায়ন, কর সুবিধা ও লজিস্টিক সুবিধা নিয়ে বিএমটিএফ সাধারণ বাজারে পণ্য বিক্রি করায় দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি বেসরকারি উদ্যোক্তারা অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়ছেন। নোটিশে এটিকে ‘প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২’-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং মুক্ত বাজার অর্থনীতির পরিপন্থী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আইনি নোটিশে দাবি জানানো হয়েছে, অবিলম্বে বিএমটিএফকে সব ধরনের অ-সামরিক বা বেসামরিক পণ্য উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ করতে হবে। প্রতিষ্ঠানটিকে তার মূল ম্যান্ডেট অনুযায়ী সামরিক অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরিতে পূর্ণ মনোনিবেশ করতে হবে।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, আগামী সাত দিনের মধ্যে কার্যকর ও দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নেওয়া হলে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মহামান্য হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে।
আইনি নোটিশটি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রতিরক্ষা সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিএমটিএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হয়েছে।

