যমুনা ব্যাংক পিএলসি ২৪ বছরের যাত্রায় শুধুই আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নয়, দেশের অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার ফলেই ব্যাংক আজ আধুনিক, উদ্ভাবনী ও প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিংয়ে এগিয়ে রয়েছে। বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মির্জা ইলিয়াস উদ্দিন আহম্মদের নেতৃত্বে যমুনা ব্যাংক দেশের ব্যাংকিং খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।
যমুনা ব্যাংকের দেশের বিস্তৃত শাখা নেটওয়ার্ক গ্রাহকসেবা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে ব্যাংকের রয়েছে ১৬৯টি শাখা, ১১৪টি উপশাখা, ৫৮টি এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্র এবং ৩৬৫-এর বেশি এটিএম ও ক্যাশ রিসাইক্লিং বুথ। এর মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ব্যাংকিং সেবা পৌঁছাচ্ছে। ব্যাংক কৃষি খাত ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার মাধ্যমে প্রান্তিক অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে।
মির্জা ইলিয়াস উদ্দিন আহম্মদ বলেন, আধুনিক ব্যাংকিংয়ের শক্তি হলো প্রযুক্তি ও টেকসই ব্যবস্থা। তাই যমুনা ব্যাংক দ্রুত ডিজিটাল রূপান্তরের দিকে এগুচ্ছে। গ্রাহকের সুবিধার জন্য চালু হয়েছে কাগজবিহীন লেনদেন, উন্নত ইন্টারনেট ও মোবাইল ব্যাংকিং, ই-কমার্স পেমেন্ট এবং আধুনিক নিরাপদ এটিএম ব্যবস্থা। এসব উদ্যোগ ব্যাংকের সেবা করেছে সহজ, নিরাপদ ও গ্রাহকবান্ধব।
প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যেই ৩৯ বার সেরা প্রাইমারি ডিলার ব্যাংক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ‘এএ১’ ক্রেডিট রেটিং অর্জন এবং দেশের শীর্ষ করদাতাদের তালিকাভুক্তি ব্যাংকের আর্থিক শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও দায়িত্বশীল ব্যবস্থাপনার প্রতিফলন। ব্যাংকের নেতৃত্ব মনে করে, শুধুমাত্র লাভ নয়, বরং কর্পোরেট সুশাসন, জবাবদিহিতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা পালনও একটি প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের মানদণ্ড। পরিবেশ ও সমাজবান্ধব কার্যক্রমে যমুনা ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। গ্রিন ব্যাংকিংয়ের অংশ হিসেবে কাগজহীন ব্যাংকিং চালুর পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের টেকসই রেটিংয়ে ব্যাংক শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে, যা ব্যাংকের বাস্তব উদ্যোগের প্রমাণ।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে মির্জা ইলিয়াস উদ্দিন আহম্মদ বলেন, যমুনা ব্যাংকের লক্ষ্য পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ব্যাংকে রূপান্তরিত হওয়া। টেকসই সম্পদ ব্যবস্থাপনা, গ্রাহক সন্তুষ্টি ও মান বজায় রাখার দিকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রযুক্তি, দক্ষ মানবসম্পদ ও সুদূরপ্রসারী কৌশলের সমন্বয়ে ব্যাংকিং খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন সম্ভব এবং যমুনা ব্যাংক সেই পথে এগুচ্ছে।
বর্তমানে ব্যাংকের গ্রাহকসংখ্যা প্রায় ১৩ লাখ। মোট আমানত প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংক বিতরণ করেছে ১৮,৮৯৯ কোটি টাকার ঋণ। এর মধ্যে করপোরেট খাতে প্রায় ১২,৯৯৪ কোটি টাকা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (এসএমই) খাতে ২,১৪৩ কোটি টাকা, খুচরা খাতে ১,০৫২ কোটি টাকা এবং কৃষি ও ক্ষুদ্র ঋণ খাতে ৩২৭ কোটি টাকা। মোট কর্মীসংখ্যা ৪,৪১১, যার মধ্যে নারী কর্মীর সংখ্যা প্রায় ১৯ শতাংশ।
টেকসই প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি যমুনা ব্যাংক করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কার্যক্রমে ধারাবাহিকভাবে ব্যয় বাড়িয়েছে। ২০২০ সালে সিএসআর খাতে ব্যয় ছিল ৩৪ কোটি টাকা, যা ২০২৪ সালে বেড়ে ৩৬ কোটি টাকা হয়েছে। সবমিলিয়ে, যমুনা ব্যাংকের গতিশীল যাত্রা দেশের ব্যাংকিং খাতে অনুকরণীয়। মির্জা ইলিয়াস উদ্দিন আহম্মদের নেতৃত্বে ব্যাংক শুধু নিজেকে নয়, বাংলাদেশের অর্থনীতিকেও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে টেকসই, উদ্ভাবনী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের দিকে।

