নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কেনায় আগস্টে দৈনিক গড় আন্তঃব্যাংক লেনদেন কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত ‘এক্সচেঞ্জ রেট ও ফরেইন এক্সচেঞ্জ মার্কেট ডাইনামিকস’ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে স্পট ও সোয়াপ—দুই ধরনের লেনদেনই হ্রাস পেয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, আগস্টে দৈনিক গড় স্পট লেনদেন কমে দাঁড়ায় ৩৩ দশমিক ২৩ মিলিয়ন ডলার, যা জুলাইয়ে ছিল ৪০ দশমিক ৭৫ মিলিয়ন ডলার। একই সময়ে সোয়াপ লেনদেন নেমে আসে ৭৭ দশমিক ০৪ মিলিয়ন ডলারে, যা জুলাইয়ে ছিল ৮৬ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন ডলার। জুনে স্পট লেনদেন ছিল ৬৮ দশমিক ৭০ মিলিয়ন ডলার এবং সোয়াপ ১১৩ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ডলার।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে ডলার কেনায় আন্তঃব্যাংক লেনদেন ধীর হয়েছে। তবে বাজারে সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় প্রয়োজনীয় ব্যাংকগুলো সহজেই ডলার পাচ্ছে, ফলে কোনো কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়নি। আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার থেকে ৪৫৪ মিলিয়ন ডলার কিনেছে টাকার বিপরীতে ডলারের অতিমূল্যায়ন রোধ করতে। মাস শেষে আন্তঃব্যাংক বিনিময় হার নির্ধারণ করা হয় প্রতি ডলার ১২১ টাকা ৬৯ পয়সা।
বিশ্লেষকদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি নিলামের মাধ্যমে ডলার না কিনত, তাহলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ইন্টারব্যাংকে বিক্রি করত। এখন সেই অর্থ রিজার্ভে যোগ হচ্ছে। রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে ডলার কিনছে, যা রিজার্ভ বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে। এতে ভবিষ্যতে সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবিলায় বাড়তি সহায়তা পাওয়া যাবে। দেড় মাস ধরে ডলারের দর ১২১ টাকা ৫০ পয়সার ওপরে থাকলেও ১২২ টাকার নিচে রয়েছে। এতে বোঝা যায়, বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। ব্যাংকগুলোর জন্য দীর্ঘ সময় ডলার ধরে রাখা লাভজনক নয়, তাই এক ব্যাংক অন্য ব্যাংকের কাছে বিক্রি করে। ইন্টারব্যাংকে চাহিদা না থাকলে সেই ডলার বাংলাদেশ ব্যাংক কিনে নেয়।
চলতি বছরের জুলাই থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কেনা শুরু করেছে। রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স বাড়ায় ব্যাংকগুলোতে ডলার জমা বেড়ে যাওয়ায় দাম না কমে যায়, সে কারণে নিলামে ডলার কিনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দর ১২১ টাকার ওপরে ধরে রেখেছে। জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত নিলামে ১ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

