বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের আগস্টে বাংলাদেশিরা বিদেশে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ৪৪৩ কোটি টাকারও বেশি খরচ করেছেন। যা গত বছরের একই মাসের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেশি।
২০২৪ সালের আগস্টে বিদেশে কার্ডের মাধ্যমে ব্যয় ছিল ৩৭২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে ব্যয় বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। তবে মাসিক হিসেবে আগস্টের ব্যয় জুলাইয়ের তুলনায় কিছুটা কমেছে। জুলাই মাসে খরচ হয়েছিল ৪৭৯ কোটি টাকা, যা আগস্টে কমে ৭.৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, বিদেশে কার্ড ব্যয় বৃদ্ধির পেছনে প্রধান দুটি কারণ হলো—রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ডলার সংকট কাটিয়ে ওঠা। একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কার্ড বিভাগের প্রধান বলেন, “২০২৪ সালের আগস্টে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল। ফলে সে সময় বিদেশে ভ্রমণ কমে যায়, বিশেষ করে ভারতে ভ্রমণ কমে আসায় সেখানে কার্ড লেনদেনও হ্রাস পায়। সেই তুলনায় এবছর পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় ব্যয় বেড়েছে।” তিনি আরও জানান, বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে ডলারের সরবরাহ স্বাভাবিক ও পর্যাপ্ত। গত বছর যেমন ডলার পাওয়া কঠিন ছিল, এখন তেমন সমস্যা নেই। তাই নগদ ও কার্ড—দুই মাধ্যমেই ডলার ব্যবহার সহজ হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশি নাগরিকরা বছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার পর্যন্ত বিদেশে খরচ করতে পারেন—ক্রেডিট কার্ড বা নগদ অর্থের মাধ্যমে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিদেশে কার্ডের মাধ্যমে লেনদেনের ৭৪.৬৪ শতাংশ হয়েছে ভিসা কার্ডে, ১৫.০৩ শতাংশ মাস্টারকার্ডে এবং ১০.২৬ শতাংশ আমেরিকান এক্সপ্রেস কার্ডে। দেশভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডে সবচেয়ে বেশি খরচ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর রয়েছে থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, ভারত, মালয়েশিয়া ও কানাডা।
এদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, দেশে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারও দ্রুত বাড়ছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা ছিল ১৮ লাখের বেশি। চলতি বছরের আগস্টে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ লাখের বেশি—অর্থাৎ চার বছরে বৃদ্ধি প্রায় ৬৪ শতাংশ।