প্রায় পাঁচ হাজার স্থায়ী কর্মীকে একযোগে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের শীর্ষ ব্যবস্থাপনা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে আদালতে তলব করেছেন ঢাকার একটি আদালত। অভিযোগ উঠেছে—কর্মী ছাঁটাইয়ের পাশাপাশি একই পদে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়াও শুরু করেছে ব্যাংকটি, যা শ্রম আইন ও নীতিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে দাবি মামলাকারীদের।
চাকরিচ্যুত দুই কর্মকর্তা—রাঙ্গামাটি শাখার সাবেক কর্মকর্তা এস এম এমদাদ হোসেন এবং চট্টগ্রামের হালিশহর শাখার জুনিয়র অফিসার মো. আরফান উল্লাহ—সম্প্রতি ঢাকার পঞ্চম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে একটি রেকর্ড ডিক্লারেশন মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে বৃহস্পতিবার ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি), প্রধান মানব সম্পদ কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে তলবের নির্দেশ দেন।
মামলার আবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক শ্রম আইন এবং নিজস্ব অভ্যন্তরীণ নীতিমালা উপেক্ষা করে হাজারো কর্মীকে বরখাস্ত করেছে। বাদীদের দাবি, এই সিদ্ধান্ত ‘স্বেচ্ছাচারী ও বেআইনি’। তারা আদালতের কাছে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত বাতিল, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত এবং চাকরিচ্যুতদের সম্পূর্ণ বেতন-ভাতাসহ পুনর্বহালের নির্দেশনা চেয়েছেন।
এছাড়া মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক যেন ইসলামী ব্যাংকের চলমান নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখে—সে অনুরোধও করা হয়েছে আদালতের কাছে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুম জানিয়েছেন, আদালত ইসলামী ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকেও তলব করেছেন। তাদের আগামী শুনানিতে হাজির হয়ে ‘গণবরখাস্ত’ ও নতুন নিয়োগের কারণ ব্যাখ্যা দিতে হবে। ইতোমধ্যে নোটিশ পাওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ইসলামী ব্যাংক আগামী ১ নভেম্বর ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার এবং ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার (ক্যাশ) পদে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানিয়েছিল। আদালতের এই আদেশ এসেছে সেই পরীক্ষার মাত্র দুই দিন আগে, যা ব্যাংকের নিয়োগ কার্যক্রমে নতুন অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।

