দেশের ব্যাংক খাত বর্তমানে সংকটাপন্ন। খেলাপি ঋণ ২৭ শতাংশের বেশি এবং এক লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি ব্যাংকগুলোর স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে ফেলেছে। এমন পরিস্থিতিতে পুনর্মূলধনের জোগান জরুরি। এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ গত সোমবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে গোলটেবিল আয়োজন করে। শীর্ষক ছিল, ‘বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে আস্থা পুনর্গঠন কেন এখন মূলধনই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?’
সভাপতির বক্তব্যে পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী ড. এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, “ব্যাংকনির্ভর অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় এত বড় খেলাপি ঋণ ও মূলধন ঘাটতির মধ্যে ব্যাংক খাত নিজেই সংকটে। বিনিয়োগের অর্থ আসবে কোথা থেকে এবং মূলধনের ঘাটতি কীভাবে পূরণ হবে—এ প্রশ্ন এখন গুরুত্বপূর্ণ। আপাতদৃষ্টিতে পুঁজিবাজারই প্রধান বিকল্প, তবে এটি এখনও যথেষ্ট শক্তিশালী নয়।”
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, “মানুষের মধ্যে ব্যাংক খাতের প্রতি অনাস্থা এখনও মিটেছে না। অন্তর্বর্তী সরকারের ১৪ মাসেও আস্থা ফেরেনি। এ আস্থা ফিরাতে ব্যাংক ও পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সমন্বয় বাড়াতে হবে।”
প্রাইম ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান ও. রশিদ বলেন, “ভবিষ্যতে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি আমাদের সামনে। পুঁজির যোগান বাড়াতে পুঁজিবাজারকে নেতৃত্ব দিতে হবে।”
নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান হুদা ভাসি চৌধুরীর সিনিয়র পার্টনার এ. এফ. নেসারউদ্দিন বলেন, “শুধু ব্যাংক একীভূত করলেই সমস্যা সমাধান হবে না। প্রয়োজন স্বচ্ছ প্রতিবেদন, ব্যাংকের মূলধনের সঠিক মূল্যায়ন ও বাস্তবভিত্তিক পুনর্গঠন কাঠামো।”
ডিএসইর ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএর সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানান, “কার্যকর বন্ড বাজার গঠনে সরকার চাইলে ট্রেজারি বন্ড পুঁজিবাজারের মাধ্যমে ইস্যু করতে পারে। এটি বড় ধরনের পরিবর্তনের সূচনা করবে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দ্য সিটি ব্যাংকের সিএফও মাহবুবুর রহমান, আইন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের ম্যানেজিং পার্টনার ব্যারিস্টার সৈয়দ আফজাল হাসান উদ্দিন প্রমুখ।

