বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, একীভূত হওয়া পাঁচ শরিয়াভিত্তিক ব্যাংকের আমানতকারীরা চলতি মাসের শেষ নাগাদ থেকে ধাপে ধাপে টাকা তুলতে পারবেন। তবে অপ্রয়োজনে টাকা না তোলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল বুধবার বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা পর্যালোচনায় দেখা গেছে—পুঁজিঘাটতি, অনিয়ম ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে এগুলো টেকসইভাবে পরিচালনা সম্ভব নয়। তাই পাঁচটি ব্যাংককে অকার্যকর ঘোষণা দিয়ে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক—এই পাঁচটি শরিয়াভিত্তিক ব্যাংককে একীভূত করে সরকারি ব্যাংকে রূপান্তর করা হচ্ছে।
গভর্নর বলেন, “প্রশাসক নিয়োগের পরও এসব ব্যাংকের ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে না। গ্রাহকের আমানত সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে। একীভূত ব্যাংকগুলো এখন থেকে সরকারি হিসেবে গণ্য হবে। প্রথম দিন থেকেই বাজারভিত্তিক মুনাফা পাবেন গ্রাহকরা।” তিনি আরও জানান, এলসি ও রেমিট্যান্স কার্যক্রম চালু থাকবে। কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ছাঁটাই করা হবে না; তারা আগের মতোই বেতন-ভাতা পাবেন।
ড. মনসুর বলেন, “সরকার পরিবর্তন হলেও আতঙ্কের কিছু নেই। একীভূত এই ব্যাংকটি হবে দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যাংক। ইতোমধ্যে এসব ব্যাংকের আর্থিক অবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে বিশেষ অডিট শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে ভবিষ্যতে পুনর্গঠন বা একীভূতকরণের বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।” তিনি আরও জানান, এসব ব্যাংকের সম্পদের তুলনায় দায় বেশি হওয়ায় তাদের শেয়ারমূল্য শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। গভর্নর হুঁশিয়ার করে বলেন, “এস আলমসহ যারা ব্যাংক খাতের অনিয়মে জড়িত, তারা আর কোনোভাবেই ফিরে আসতে পারবে না।”

