চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের আমানত ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেড়েছে। এটি গত ১৮ মাসের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃদ্ধি। আগষ্ট ও সেপ্টেম্বরে টানা দুই মাস আমানতের প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক রেখেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, আগষ্টে আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ০২ শতাংশ। এটি ১৭ মাসে সর্বোচ্চ। দীর্ঘ সময়ের স্থবিরতার পর এটি ব্যাংক খাতে আস্থা ফেরার ইঙ্গিত দেয়। আগষ্টের আগে টানা ১৩ মাস আমানতের প্রবৃদ্ধি ৯ শতাংশের নিচে ছিল। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুনে এটি ৯ দশমিক ২৫ শতাংশে পৌঁছেছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগষ্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে প্রবৃদ্ধি সামান্য কমলেও সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এটি গত ১৬ মাসে উল্লেখযোগ্য উন্নতি। ব্যাংকারদের মতে, বর্তমানে ব্যাংকের আমানতের সুদের হার সাড়ে ৮ থেকে সাড়ে ৯ শতাংশ। সেপ্টেম্বরের মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ হওয়ায় প্রকৃত সুদের হার এখনও পজিটিভ। সেপ্টেম্বরে ট্রেজারি বিল বন্ডের সুদের হার কমতে শুরু করলে অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ব্যাংকে আমানত রাখতে শুরু করেছে। ফলে আমানত বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতের আমানত দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। এটি ২০২৪ সালের একই সময়ের ১৭ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকার চেয়ে বেশি। গত বছরের আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর কয়েকটি ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পর ঐ ব্যাংকগুলো থেকে টাকা তোলার প্রবণতা বাড়েছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আবারও ঐ ব্যাংকগুলোতে টাকা ফিরতে শুরু করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ব্যাংকগুলোতে আমানত বৃদ্ধির পাশাপাশি সাধারণ মানুষের হাতে থাকা নগদও কমছে। সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকের বাইরে থাকা মুদ্রার পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৭৪ হাজার কোটি টাকা, যা এক বছর আগে ২ লাখ ৮৩ হাজার কোটি টাকা ছিল। অর্থাৎ ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকা এক বছরে কমেছে ৮ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা।

