বাংলাদেশ ব্যাংকের পদোন্নতি ও নিয়োগপ্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে স্থবির রয়েছে। একই সঙ্গে কর্মকর্তা পর্যায়ে কর্মপরিবেশ নিয়েও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল’ ১০ দফা দাবিতে গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে কর্মকর্তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, পেশাগত সুরক্ষা এবং বিদ্যমান বৈষম্য দূর করার দাবি জানানো হয়েছে।
চিঠির দাবির সমর্থনে আজ সোমবার ব্যাংকের কর্মকর্তাদের একটি অংশ মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এই অংশটি বিএনপি-সমর্থিত হিসেবে পরিচিত।
১০ দফা দাবির মূল বিষয়বস্তু:
বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিলের সভাপতি এ কে এম মাসুম বিল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা শ্রাবণ ৫ নভেম্বর গভর্নরকে চিঠি দিয়েছেন। এতে মূলত নিম্নলিখিত বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে:
পদোন্নতি ও নিয়োগে স্থবিরতা: বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রথম শ্রেণির ৬ হাজার ২৬০টি পদের মধ্যে ১ হাজার ৯৩৬টি পদ শূন্য। পাশাপাশি সর্বোচ্চ পদ নির্বাহী পরিচালকের ৪টি পদও দীর্ঘদিন শূন্য রয়েছে। কর্মকর্তারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। চিঠিতে দ্রুত নিয়োগ, প্যানেল তৈরি এবং পদোন্নতির প্রক্রিয়া চালুর দাবি জানানো হয়েছে।
কর্মপরিবেশ ও প্রশাসনের দূরত্ব: চিঠিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ফ্লোরে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ তালাবদ্ধ রাখা হয়েছে। যাতায়াত কেবল লিফটে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে, যা কর্মকর্তাদের ‘ভীতি ও অস্বস্তিকর পরিবেশ’ মনে হচ্ছে।
উপদেষ্টা ও পরামর্শক নিয়োগে আপত্তি: কর্মকর্তারা বাইরে থেকে উপদেষ্টা ও পরামর্শক নিয়োগের বিরোধিতা করেছেন। অভিযোগ, তাদের আচরণ ব্যাংকের কর্মপরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
চিঠিতে আরও দাবি করা হয়েছে:
- দুর্নীতি দমন কমিশনের হয়রানি কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।
- যুগ্ম পরিচালক পর্যায়ে গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ভাতা চালু করা।
- জব্দ করা লকার দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়া।
- নতুন পদোন্নতি নীতিমালায় অফিস শৃঙ্খলা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা।
- অফিসার্স ওয়েলফেয়ার কাউন্সিলের সঙ্গে প্রতি ছয় মাসে আলোচনায় বসার নিশ্চয়তা।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বর্তমান গভর্নরের যোগদানের এক বছরের বেশি সময় পার হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সেবা ও কর্মপরিবেশে কোনো দৃশ্যমান উন্নতি হয়নি। বিষয়টি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।

