শূন্য আর শূন্য যোগ করলে শূন্যই হয়। আবার দুই শূন্য মিললে শূন্যই হয়—এরশাদের সময় এ কথাটি অশ্লীল উপায়ে জনপ্রিয় করেছিলেন রাজনীতিবিদ শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন। এবার সেই দৃষ্টান্ত অর্থনীতিতে প্রযোজ্য হতে পারে। দুর্বল+দুর্বল=আরও দুর্বল।
কানাডার ইউনিভার্সিটি অব উইন্ডসরের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মাইকেল এস শিহ এর একটি গবেষণা প্রমাণ করেছে, ব্যাংক একীভূত ও একত্রীকরণ নীতি সব সময় সফল হয় না। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে দ্য কোয়ার্টারলি রিভিউ অব ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্স জার্নালে।
অধ্যাপক শিহ ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের মধ্যে মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও থাইল্যান্ডের ৫০টির বেশি ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি দেখেছেন, যখন দুই ব্যাংকের দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকি ৫০ শতাংশের বেশি থাকে, তখন তাদের একীভূত করলে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। অর্থাৎ দুটি দুর্বল ব্যাংক একত্র করলে তৈরি হয় আরও দুর্বল ব্যাংক। একটি অসুস্থ ব্যাংক আরেকটি অসুস্থ ব্যাংকের হাত ধরে সুস্থ হতে পারে না। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, জোর করে মার্জার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দক্ষতা বাড়াতে পারেনি। বরং অনেক সময় নতুনভাবে অদক্ষ ব্যাংক তৈরি হয়েছে। তবে একটি ভালো ব্যাংককে দুর্বল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করলে ফল কিছুটা ভালো হতে পারে।
খেলাপি ঋণ যখন ৭৭ শতাংশ:
বাংলাদেশ সরকার পাঁচটি দুর্বল ব্যাংক একীভূত করে একটি বড় ব্যাংক গঠনের পরিকল্পনা করছে। ব্যাংকগুলো হলো ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক। এই পাঁচ ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা, যা তাদের বিতরণ করা ঋণের ৭৭ শতাংশ। ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের অনুপাত রয়েছে: ইউনিয়ন ব্যাংক ৯৮%, ফার্স্ট সিকিউরিটি ৯৬%, গ্লোবাল ইসলামী ৯৫%, সোশ্যাল ইসলামী ৬২%, এক্সিম ব্যাংক ৪৮%। এমন পরিস্থিতিতে এসব ব্যাংক টিকে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে সরাসরি বন্ধ করা সমাধান নয়। কারণ, এই পাঁচ ব্যাংকের অমানত ১ লাখ ৩৬ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা, যা সরকারের দায়িত্বে আসে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, নতুন একীভূত ব্যাংক প্রথমে সরকার চালাবে, তবে পরে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হবে। এর আগে ব্যাংকটিকে ঠিকঠাকভাবে পরিচালনা করতে হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দুর্বল ব্যাংক একীভূত করে সফল হওয়া দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া, যা সফল করতে প্রয়োজন সঠিক তদারকি, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং ভালো বিনিয়োগকারী। যদিও ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ অনুযায়ী সবকিছু নিয়ম মেনে হবে, সরকারি মালিকানাধীন বড় ব্যাংকে প্রভাবশালীরা সুবিধা নেবে না—এটি বাস্তবে কঠিন।
নতুন ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন হবে ৪০ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে পরিশোধিত মূলধন ৩৫ হাজার কোটি টাকা। প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের ১৫ হাজার কোটি টাকা মূলধনে রূপান্তরিত হবে, বাকি ২০ হাজার কোটি টাকা সরকার দেবে। অর্থাৎ এটি হবে জনগণের করের টাকা। ভবিষ্যতে আমানতকারীরা তাদের অর্থ ফেরত পাবেন, কিন্তু সাধারণ শেয়ারধারীরা লাভে অংশ নেবে না। বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এই একীভূত পরিকল্পনা যদি সঠিক তদারকি ও বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ না পায়, তবে পাঁচটি দুর্বল ব্যাংকের মিলনে আরও একটি বড় দুর্বল ব্যাংক তৈরি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। সফলতার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে তা অনেক বড় চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে অর্জন করতে হবে।
ইতিহাস দেখায়, পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক সংকটের সময়ও দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূত করে সুস্থ ব্যাংকের সঙ্গে মেলানো হয়েছিল। অনেক ব্যাংক বন্ধ করা হয়েছিল এবং তিনটি ধরনের সংস্থা গঠন করা হয়েছিল: ব্যাংক পুনর্গঠন, খারাপ ঋণ ব্যবস্থাপনা এবং আমানতকারীর সুরক্ষা।
ইন্দোনেশিয়া: ১৯৯৮ সালে ৭০টির বেশি ব্যাংক বন্ধ করে চারটি বড় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক একীভূত করে ‘ব্যাংক মানদিরি’ গঠন করা হয়। খারাপ সম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য আইবিআরএ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ইউনিট এবং আমানতকারীর সুরক্ষায় ২০০৫ সালে ইন্দোনেশিয়া ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স করপোরেশন তৈরি করা হয়।
থাইল্যান্ড: ৫৮টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে পুনর্গঠনের জন্য ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর রিস্ট্রাকচারিং অথরিটি (এফএসআরএ) গঠন করা হয়। খারাপ ঋণ ব্যবস্থাপনার জন্য ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট করপোরেশন (এফআইএএমসি) তৈরি করা হয়।
মালয়েশিয়া: দানা মদাল ন্যাশনাল বেরহাদ গঠন করে ৫৮টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান একীভূত করে ১০টি বড় ব্যাংক তৈরি করা হয়। খারাপ ঋণ পুনরুদ্ধারের জন্য আলাদা সংস্থা গঠন করা হয়। দেশটি ব্যাংক খাত পুনর্গঠনে সবচেয়ে সফল এবং আইএমএফ ঋণ নেয়নি।
দক্ষিণ কোরিয়া: ফিন্যান্সিয়াল সুপারভাইজরি কমিশন গঠন করে ১৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ৫টি বন্ধ ও ১০টির বেশি একীভূত করে। খারাপ সম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য কোরিয়া অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট করপোরেশন এবং আমানতকারীদের সুরক্ষায় কেডিআইসি তৈরি করা হয়।
এই চার দেশের অভিজ্ঞতা দেখায়, সুস্থ ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংক একীভূত করলে ফলাফল ভালো হয়, তবে লোকবল কমানো এবং শাখা বন্ধের ফলে সামাজিক অসন্তোষ দেখা দেয়। বাংলাদেশের পরিস্থিতি আলাদা। তদারকি ব্যবস্থা দুর্বল, আর সরকারি ব্যাংক পরিচালনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকা সীমিত। ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ অনুযায়ী সবকিছু নিয়মমাফিক চললেও, সরকারি মালিকানাধীন বড় ব্যাংকে প্রভাবশালীরা সুবিধা নেবে না—এটি বাস্তবে কঠিন।
বিশ্লেষণ থেকে বলা যায়, বাংলাদেশে পাঁচটি দুর্বল ব্যাংক একীভূত করলে ইতিহাসের শিক্ষা অনুযায়ী সাফল্য সম্ভাবনা আছে, তবে তা নিশ্চিত নয়। সঠিক তদারকি, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং কার্যকর ব্যবস্থাপনা ছাড়া বড় ঝুঁকি থাকছেই। একাধিক দুর্বল ব্যাংক একীভূত করার উদাহরণ রয়েছে, তবে সাফল্য সবসময় আসে না।
স্পেন ২০১০ সালে কাইসা গালিসিয়া ও কাইসানোভা নামের দুটি দুর্বল ব্যাংক একীভূত করা হয়। সরকারের বড় অঙ্কের মূলধন দিতে হয়। ব্যাংকটি এক বছরও ঠিকমতো চালাতে না পারায় তা জাতীয়করণ করা হয়। পরে বিক্রি করে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। এখন এটি পরিচালিত হচ্ছে আবানকা করপোরাসিওন ব্যাংকারিয়া নামে। রাশিয়ার ওটক্রিতিয়ে দেশের অন্যতম বড় বেসরকারি ব্যাংক। ২০১৭ সালে চরম আর্থিক সংকটে পড়ে, তখন সরকার হস্তক্ষেপ করে। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক অধিকাংশ শেয়ার নিজের হাতে নেয় এবং প্রায় ৫ শ বিলিয়ন রুবল মূলধন সহায়তা দেয়। খারাপ ঋণ আলাদা সংস্থার হাতে চলে যায়। ২০২২ সালে ব্যাংকটি বিক্রি করা হয় রাষ্ট্রীয় ভিটিবি ব্যাংকের কাছে। সরকারের বিপুল অর্থ ব্যয় সত্ত্বেও ব্যাংক বাঁচানো সম্ভব হয়। এই উদাহরণগুলো থেকে স্পষ্ট হয় যে, দুর্বল ব্যাংক একীভূত করে সফল হওয়া দীর্ঘ, ব্যয়বহুল ও জটিল প্রক্রিয়া। এতে প্রয়োজন সঠিক তদারকি, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং কার্যকর বিনিয়োগকারী।
আইএমএফ সতর্ক: দুর্বল ব্যাংক একীভূত করলে বড় ঝুঁকি তৈরি হয়:
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ২০০৪ সালে ব্যাংকিং সংকট ব্যবস্থাপনা শীর্ষক একটি বিশেষ রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল। রিপোর্টে আর্জেন্টিনা, রাশিয়া, তুরস্ক, ইকুয়েডর ও উরুগুয়ের ব্যাংক সংকটের অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। উদ্দেশ্য ছিল, ভবিষ্যতে সংকট দেখা দিলে সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা কীভাবে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে তা নির্দেশ করা।
আইএমএফ সতর্ক করেছে, দুর্বল ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণ এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ এতে তৈরি হয় বড় কিন্তু দুর্বল ব্যাংক, অথবা এমনকি শক্তিশালী ব্যাংকও দুর্বল হয়ে যেতে পারে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, সংকটের সময় সরকার বা নিয়ন্ত্রক সংস্থা দ্রুত স্থিতি ফেরাতে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূত করে। এতে শাখা ও কর্মীসংখ্যা কমে, ব্যয় কিছুটা কমে, এবং রাষ্ট্রীয় সহায়তা দেওয়া হয়। কিন্তু ব্যাংকের প্রকৃত আর্থিক শক্তি, সম্পদ মান বা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ঠিক না হলে, একীভূতকরণের ফলাফল হয় আরেকটি বড় কিন্তু দুর্বল প্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশের ব্যাংক একীভূত পরিকল্পনা: সাফল্য না ঝুঁকি?
বাংলাদেশ সরকার বেসরকারি খাতের পাঁচটি দুর্বল ব্যাংক একীভূত করে একটি বড় ব্যাংক গঠনের পরিকল্পনা করছে। এই ব্যাংকটি শুরুতে সরকারি মালিকানায় থাকবে। পরিকল্পনার আইনি কাঠামো হিসেবে তৈরি হয়েছে ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’। এই অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সংকটপূর্ণ সম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য ডিস্ট্রেসড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গঠন বা স্থানীয় ও বিদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হাতে সম্পদ হস্তান্তর করা যেতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংস্থার কার্যকারিতা সরকারের উদ্যোগের সফলতা ও ব্যর্থতার মূল নির্ধারক। বাংলাদেশে খারাপ ঋণ সম্পূর্ণ উদ্ধার করার কোনো নজির নেই, আর সম্ভাবনা আরও কম। এখানে ঋণের বিপুল অংশ অস্বাভাবিকভাবে ব্যয় ও অন্য খাতে ব্যবহার করা হয়েছে, এবং অর্থ পাচারও ব্যাপক হয়েছে। তাই সরকার যে ‘বেইল ইন’ পরিকল্পনা করছে, তার ওপরই আমানতকারীরা ভরসা রাখতে হবে। ধৈর্যের প্রয়োজন অনেক বেশি।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, নতুন একীভূত ব্যাংক সরকার চালাবে, তবে পরে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হবে। এর আগে ব্যাংকটিকে ঠিকঠাকভাবে পরিচালনা করতে হবে। যদিও সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক পরিচালনায় দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে, সদৃশ নজির নেই। একসময় সরকারি মালিকানায় পরিচালিত বেসিক ব্যাংক ভালো উদাহরণ ছিল, কিন্তু রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে আজ সেটিও সীমিতভাবে টিকে আছে।
বাংলাদেশে তদারকি ব্যবস্থা দুর্বল, আর সরকারি ব্যাংক পরিচালনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকা সীমিত। ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ অনুযায়ী নিয়ম মেনে চললেও, সরকারি মালিকানাধীন বড় ব্যাংকে প্রভাবশালীরা সুবিধা নেবে না—এটি বাস্তবে কঠিন। বিশ্লেষণ থেকে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের এই উদ্যোগের সাফল্য অনেক চ্যালেঞ্জের সঙ্গে জড়িত। সঠিক তদারকি, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং কার্যকর ব্যবস্থাপনা ছাড়া নতুন একীভূত ব্যাংক বড় ঝুঁকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বাংলাদেশ কি পারবে?
২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের কয়েকটি ব্যাংকে ধস নেমেছিল। এর পর আইএমএফের অর্থনীতিবিদ টোবিয়াস অ্যাড্রিয়ান নেতৃত্বে একটি গবেষণা করা হয়। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত ‘গুড সুপারভাইজেশন: লেসনস ফ্রম দ্য ওয়ার্ল্ড’ নামের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংককে নিরাপদ ও স্থিতিশীল রাখতে শুধু নিয়মকানুন নয়, কার্যকর তদারকিই মূল চাবিকাঠি।
আইএমএফ ২০১২ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত ৬০টি দেশের ব্যাংক তদারকি পর্যালোচনা করে দেখিয়েছে, অনেক দেশে তদারকি সংস্থা সরকারি প্রভাবমুক্ত নয় এবং প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষাও নেই। রাজনৈতিক চাপের মধ্যে বা নীতিনির্ধারকের সমর্থন ছাড়া দুর্বল তদারকি সংকটের মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই সতর্কতা আরও প্রযোজ্য। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে মন্ত্রীর সমান পদমর্যাদা দেওয়ার বিষয়টিও যে ভালোভাবে নেওয়া হয়নি, তা চিন্তার বিষয়। সেখানে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে সম্পূর্ণ স্বাধীন করে দেওয়া হবে—এমন প্রত্যাশা তেমন বাস্তবসম্মত নয়।
পাঁচ দুর্বল ব্যাংক একীভূত করার পরিকল্পনা উচ্চাভিলাষী। একদিকে, ব্যাংক বন্ধ বা মালিকানা কেড়ে নেওয়ার মতো সতর্ক বার্তা দেওয়া দরকার। অন্যদিকে, পরিকল্পনা সফল হলে এটি বিশ্বের জন্য নতুন উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে যদি কোনো শাখা বন্ধ না করে, কোনো কর্মী ছাঁটাই না করে।
তবে প্রশ্ন থেকে যায়—বাংলাদেশ কি পারবে? কার্যকর তদারকি, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং সঠিক বিনিয়োগকারীর উপস্থিতি ছাড়া নতুন একীভূত ব্যাংক বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।

