দীর্ঘদিন সংকটে থাকা পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূত হয়ে নতুন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসি’ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল। গতকাল রবিবার (৩০ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সভায় নতুন ব্যাংকটির চূড়ান্ত লাইসেন্স অনুমোদন করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা, সুশাসন ও জবাবদিহিতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়। এর আওতায় এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংককে ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ ২০২৫–এর অধীনে আনা হয়। পরে এসব ব্যাংককে অকার্যকর ঘোষণা করে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়।
গত ৯ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, পাঁচটি সংকটাপন্ন ব্যাংক একীভূত করে একটি নতুন রাষ্ট্র-মালিকানাধীন ব্যাংক গঠন করা হবে। এরপর ৯ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) ইস্যু করে। এলওআই অনুযায়ী, রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসে নিবন্ধনের পাশাপাশি ব্যাংকটির ৩৫ হাজার কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা সরকারি অংশ ইতোমধ্যেই পরিশোধ করা হয়েছে। চূড়ান্ত লাইসেন্স পাওয়ার পর সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়াকে নবগঠিত ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, মূলধনের দিক থেকে এটি দেশের সর্ববৃহৎ রাষ্ট্রায়ত্ত শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক হবে। আমানতকারীদের আশ্বস্ত করতে বলা হয়েছে, ডিপোজিট সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ অনুযায়ী দুই লাখ টাকা পর্যন্ত আমানত সম্পূর্ণ নিরাপদ। একীভূতকরণের পর এই আমানত দ্রুত পরিশোধ করা হবে। দুই লাখ টাকার বেশি আমানত কীভাবে পরিশোধ হবে, তার স্কিমও শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আশা প্রকাশ করেছে, নিবিড় তত্ত্বাবধান ও পেশাদার ব্যবস্থাপনায় নতুন ব্যাংকটি অল্প সময়ের মধ্যেই একটি আধুনিক, গতিশীল ও প্রতিযোগিতামূলক শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। সরকারের লক্ষ্য হলো জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং ব্যাংকিং খাতকে আরও সবল, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করা।

