সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ এখনো সবচেয়ে নিরাপদ বলে মনে করেন বেশির ভাগ সঞ্চয়কারী। সুদের হারও তুলনামূলক ভালো। বিশেষ করে মধ্যবিত্তদের জন্য সঞ্চয়পত্র দীর্ঘদিন ধরে একটি নির্ভরযোগ্য সঞ্চয়ের মাধ্যম। ব্যাংক খাতের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে এই নির্ভরতা আরও বেড়েছে। কারণ সঞ্চয়পত্রে মূলধনের পাশাপাশি মুনাফারও নিশ্চয়তা থাকে। এর মধ্যে পেনশনার সঞ্চয়পত্রে মেলে সর্বোচ্চ মুনাফা।
বর্তমানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর চার ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে। এগুলো হলো পরিবার সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র এবং তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র। পরিবার সঞ্চয়পত্র ছাড়া বাকি সব ধরনের সঞ্চয়পত্রে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান উভয়ই বিনিয়োগ করতে পারে।
প্রতিবছর জানুয়ারি ও জুলাই মাসে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার পর্যালোচনা করা হয়। প্রয়োজন অনুযায়ী হার বাড়ানো বা কমানো হয়। আগামী জানুয়ারিতেও মুনাফার হার আবার পর্যালোচনায় উঠবে। তাই জানুয়ারির আগে সঞ্চয়পত্র কিনলে ক্রেতারা বর্তমান ঘোষিত হারে মুনাফা পাবেন। এখন দেখা যাক কোন সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার কত।
মুনাফার হার:
সবচেয়ে বেশি মুনাফা পাওয়া যায় পেনশনার সঞ্চয়পত্রে। সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে পাঁচ বছর শেষে বা মেয়াদপূর্তিতে মুনাফার হার ১১.৯৮ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করলে এই হার হয় ১১.৮০ শতাংশ। এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য এবং মৃত চাকরিজীবীর পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী, স্ত্রী বা সন্তানও কেনার যোগ্য।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মুনাফা মেলে পরিবার সঞ্চয়পত্রে। সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে এর মুনাফার হার ১১.৯৩ শতাংশ। সাড়ে ৭ লাখের বেশি হলে হার নামে ১১.৮০ শতাংশে। তবে এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন শুধু প্রাপ্তবয়স্ক নারীরা। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে মুনাফার হার ১১.৮৩ শতাংশ। সাড়ে ৭ লাখের বেশি বিনিয়োগ করলে মুনাফা হয় ১১.৮০ শতাংশ।
তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে মুনাফার হার ১১.৮২ শতাংশ। সাড়ে ৭ লাখের বেশি হলে এই হার দাঁড়ায় ১১.৭৭ শতাংশে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন জরুরি প্রয়োজনে নয়, মেয়াদপূর্তির আগে সঞ্চয়পত্র ভাঙা উচিত নয়। কারণ এতে মুনাফার হার কমে যায়।

