সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক থেকে গ্রাহক ও আমানতকারীদের টাকা ফেরত পেতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, টাকা ফেরতের জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরি কাজ চলমান রয়েছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সচিবালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান গভর্নর। এর আগে সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
পরিচালনা পর্ষদের ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। বৈঠকে পর্ষদের অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও অংশ নেন। বৈঠক শেষে মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়ার নেতৃত্বে নতুন ব্যাংকটির পরিচালকেরা অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরও উপস্থিত ছিলেন।
অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে গভর্নর সাংবাদিকদের বলেন, আমানতকারীদের টাকা সরাসরি তাঁদের নিজ নিজ ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হবে। এ প্রক্রিয়ায় ৭, ১০ কিংবা ১৫ দিন সময় লাগতে পারে। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে কারিগরি কাজ এখনো চলমান।
গভর্নর আরও বলেন, এই ব্যাংকের হিসাব খোলা হয়েছে। প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে রয়েছে। কেউ টাকা পাবেন আর কেউ পাবেন না—এ ধরনের জটিলতা তারা চান না। ঝামেলা ছাড়াই যেন প্রত্যেক আমানতকারীর টাকা তাঁর হিসাবে পৌঁছে যায়, সে লক্ষ্যেই কাজ করা হচ্ছে। এ সময় সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সাংবাদিকেরা নতুন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া বলেন, এ পদে কিছু আবেদন জমা পড়েছে। আবেদন জমা দেওয়ার সময় এখনো শেষ হয়নি। তিনি জানান, এটি একটি কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের বিষয়।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক আজ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের সার্বিক কার্যক্রম, অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে ব্যাংকের বর্তমান আর্থিক অবস্থা, পরিচালন কাঠামো, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং গ্রাহকসেবা উন্নয়নের বিষয়গুলো গুরুত্ব পায়। ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ওপরও জোর দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পর্ষদের সদস্যরা ব্যাংকের সুশাসন জোরদার, স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং ইসলামি ব্যাংকিং নীতিমালা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি জাতীয় স্বার্থে ব্যাংকটির কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করার অঙ্গীকার করেন তাঁরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পর্ষদ সভার নোটিশে মোট ১৭টি আলোচ্য বিষয় ছিল। এর মধ্যে ছিল পরিচালকদের সম্মানীর পরিমাণ নির্ধারণ, ব্যাংকের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা এবং সিলমোহর, লোগো, স্লোগান, প্যাড ও ব্যানার বা সাইনবোর্ডসংক্রান্ত বিষয়।
জানা গেছে, অন্যান্য ব্যাংকের মতো সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের আর্থিক বছর হবে জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর। তবে ব্যাংকের উদ্বোধনের তারিখ, সিলমোহর ও লোগো নির্ধারণ করা হবে পর্ষদের আরও দু-একটি বৈঠকের পর। আপাতত পরিচালকদের সম্মানী বকেয়া থাকবে।

