কৃষি ও এসএমই খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে ব্যাংকগুলোর জন্য প্রভিশন সংরক্ষণের শর্ত শিথিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব খাতে দেওয়া ঋণের বিপরীতে এখন থেকে মাত্র শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। আগে একই ধরনের ঋণে প্রভিশন রাখার বাধ্যবাধকতা ছিল এক থেকে পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত।
গতকাল রোববার ২১ ডিসেম্বর এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে স্ট্যান্ডার্ড ও স্পেশাল মেনশন অ্যাকাউন্ট বা এসএমএ ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে এক শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হতো। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সিএমএসএমই খাতের আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো এই সুবিধা পাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন মুখপাত্র বলেন, এসএমই খাতকে আরও উৎসাহিত করতে ঋণের প্রভিশনিং কমানো হয়েছে। এতে ব্যাংকগুলো বেশি পরিমাণে ঋণ বিতরণে আগ্রহী হবে। তিনি বলেন, এটি মূলত ব্যাংকগুলোর জন্য এক ধরনের প্রণোদনা। তবে মুখপাত্র সতর্ক করে বলেন, কোনো ব্যাংক যদি অন্য খাতের ঋণকে এসএমই খাতের নামে দেখিয়ে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সিদ্ধান্তের পেছনে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভার ভূমিকা রয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বর গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় দেশের ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা সিএমএসএমই ঋণের প্রভিশনিং কমানোর দাবি জানান। সভার পরই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নেয়।
ওই বৈঠকে গভর্নর বলেন, দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে কৃষি খাতের অবদান ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ হলেও এ খাত মোট ঋণের মাত্র দুই শতাংশ পাচ্ছে। তিনি কৃষি খাতে ঋণ বাড়িয়ে ১০ শতাংশের বেশি করার পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে এসএমই ও সিএমএসএমই খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর ওপরও জোর দেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই উদ্যোগে কৃষি ও এসএমই খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর পাশাপাশি অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

