যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক সিদ্ধান্তে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ওয়াশিংটন–বেইজিং সম্পর্ক। সাম্প্রতিক ঘোষণায় মার্কিন প্রশাসন চীনা পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দিয়েছে। এই পদক্ষেপকে চীন বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের “দ্বিমুখী ও চিরাচরিত চাপ প্রয়োগের কৌশল”।
বেইজিং স্পষ্ট জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের জবাবে তারা পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র “অতিরিক্ত ভয় ও প্রচারণা চালাচ্ছে” এবং “বিশ্বকে বন্দি করার চেষ্টা করছে”।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও শুল্কনীতি বৈষম্যমূলক ও একতরফা পদক্ষেপ। তারা বলেছে, “জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করেছে, যা বাণিজ্য সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর।”
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এক মন্তব্যে বলেন, চীনের সঙ্গে তাঁর আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে। তিনি বলেন, “চিন্তা করবেন না, সব ঠিক হয়ে যাবে।” তবে বাণিজ্য বিরোধ মেটাতে কীভাবে অগ্রসর হবেন, সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।
অন্যদিকে চীনও বিরল খনিজ (Rare Earth Minerals) রপ্তানির ওপর নতুন নিয়ন্ত্রণ জারি করেছে। বেইজিং জানায়, এটি “জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় স্বাভাবিক পদক্ষেপ”। উল্লেখ্য, বিশ্বে প্রক্রিয়াজাত বিরল খনিজের প্রায় ৯০ শতাংশই চীনে উৎপাদিত, যা সৌর প্যানেল, স্মার্টফোন ও সেমিকন্ডাক্টরের মতো প্রযুক্তি পণ্যে ব্যবহৃত হয়।
এই অবস্থাকে বিশেষজ্ঞরা নতুন এক বাণিজ্যযুদ্ধের সূচনা হিসেবে দেখছেন। মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র প্রথম চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। জবাবে চীনও মার্কিন পণ্যে ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক দেয়।
মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের পরপরই আর্থিক বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ২.৭ শতাংশ কমে যায়—এপ্রিলের পর এটিই ছিল সবচেয়ে বড় পতন।
বিবিসি ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানায়, এই সাম্প্রতিক উত্তেজনা আবারও মার্কিন-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা উসকে দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, উভয় দেশই এখন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিক্রিয়া হিসাব করে দেখছে।
চিপ ও সেমিকন্ডাক্টর রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এবং চীনের প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল ইতিমধ্যেই চাপে পড়েছে। পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াবে, তা এখনো অনিশ্চিত।

