সিরামিক খাতে উৎপাদন করতে গিয়ে আকিজ সিরামিকস কঠিন সময়ের মুখোমুখি হয়েছে। গ্যাস সরবরাহে ন্যূনতম ত্রুটিও তাদের জন্য বিশাল ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির হিসাব অনুযায়ী, একমাত্র গ্যাস সংকটের কারণে ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালে তারা ৩০০ কোটি টাকা লোকসান গুনেছে।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা বায়োমাস ব্যবহার শুরু করেছে। তবে বায়োমাস শিল্প উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট নয়; এটি মূলত সহায়ক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত তারা এলপিজিকে সমাধান হিসেবে বেছে নিয়েছে। ওমেরার সহায়তায় কারখানাগুলোয় এলপিজি স্থাপন করা হলেও, শিল্প উৎপাদনের জন্য এটি প্রথম পছন্দ নয়। কারণ এলপিজির দাম অন্যান্য জ্বালানির তুলনায় প্রায় ২০০ শতাংশ বেশি।
কেন এই ব্যয়বহুল পথ নেওয়া হলো? আকিজ সিরামিকসের ব্যাখ্যা, উৎপাদনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য তারা বাধ্য হয়েছে। অন্যথায় বাজারে গ্যাপ তৈরি হবে, ভোক্তাদের আস্থা কমবে এবং বিনিয়োগ অকেজো হয়ে যাবে। এলপিজি ব্যবহার শুরু করার ফলে এখন উৎপাদন নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই। ব্যবসার সম্প্রসারণ বা নতুন লাইন স্থাপনের বিষয়ে ভাবার প্রয়োজনও কমেছে।
তাদের উৎপাদনের মাত্রা অনুযায়ী এলপিজি ব্যবহার করে তারা টিকে আছে। বর্তমানে উৎপাদনের মাত্রার ২০ শতাংশ এলপিজি ব্যবহার হচ্ছে, যা খরচ বাড়াচ্ছে—৩০ টাকার বদলে ৫৬–৫৭ টাকা খরচ পড়ছে। আকিজ সিরামিকসের মতে, যদি এলপিজির দাম ন্যূনতম ৪৫ টাকার মধ্যে নিয়ে আসা যায়, উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে এবং অন্যান্য শিল্প-কারখানাও এলপিজি ব্যবহার করতে আগ্রহী হবে।
সংস্থা বলছে, গ্যাস সংকটের কারণে নতুন গ্যাস লাইন স্থাপন করা হচ্ছে না। এলএনজি আমদানি অব্যাহত রাখতে হবে। একই সঙ্গে এলপিজির দাম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শিল্প উৎপাদন ও এলপিজি শিল্প উভয়ই বিকশিত হবে।