চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বৈশ্বিক স্মার্টফোন বিক্রি বেড়েছে ২ দশমিক ৬ শতাংশ। এ সময় মোট বিক্রি ৩২ কোটি ইউনিট ছাড়িয়েছে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশন (আইডিসি) এক প্রতিবেদনে জানায়, স্মার্টফোনের বাজার এখন পুনরুদ্ধারের পথে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রিমিয়াম সেগমেন্টে বিক্রি বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। নতুন ডিজাইন ও সাশ্রয়ী মূল্যের এআই-সক্ষম স্মার্টফোনের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। অনেক গ্রাহক পুরনো ডিভাইস বদলে নতুন ফোন নিচ্ছেন।
আইডিসির ওয়ার্লওয়াইড ক্লায়েন্ট ডিভাইসেস বিভাগের সিনিয়র রিসার্চ ডিরেক্টর নাবিলা পোপাল বলেন, ‘স্মার্টফোন শিল্প এখন ধারাবাহিকভাবে সম্প্রসারিত হচ্ছে। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও শুল্ক জটিলতার মধ্যেও বাজারে স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, নির্মাতারা এখন শুধু হার্ডওয়্যার বা সফটওয়্যারে নতুনত্ব আনছে না, বরং ক্রেতাদের কেনাকাটাও সহজ করছে। উন্নত ডিভাইসের সঙ্গে আকর্ষণীয় কিস্তি ও পুরনো ফোন বিনিময় সুবিধা যোগ হওয়ায় নতুন ফোন কেনা এখন অনেকের জন্য সহজ হয়ে গেছে।
আইডিসির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সিসকো জেরোনিমো বলেন, অ্যাপল ও স্যামসাংয়ের নতুন প্রিমিয়াম মডেল অনেক ক্রেতাকে ডিভাইস আপগ্রেডে উৎসাহিত করেছে। পাশাপাশি সাশ্রয়ী মূল্যের এআই-সক্ষম স্মার্টফোনগুলো মাঝারি দামের বাজারে বিক্রি বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুলাই-সেপ্টেম্বরে অ্যাপল ও স্যামসাং উভয়ই রেকর্ড বিক্রির ফলাফল প্রকাশ করেছে। অ্যাপলের জুলাইয়ের বিক্রি ছিল কোম্পানির ইতিহাসে সর্বোচ্চ, আর সেপ্টেম্বরে উন্মোচিত আইফোন ১৭ সিরিজের চাহিদা আগের সব মডেলকে ছাড়িয়ে গেছে।
অন্যদিকে, স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি জেড ফোল্ড সেভেন ও ফ্লিপ সেভেন এখন পর্যন্ত তাদের সেরা ফোল্ডেবল মডেল হিসেবে বিক্রি পেয়েছে, যা নতুন করে গতি দিয়েছে ফোল্ডেবল ফোন বাজারে।
অ্যাপল ও স্যামসাংয়ের পর বাজার হিস্যার দিক থেকে তৃতীয় স্থানে রয়েছে শাওমি। প্রতিষ্ঠানটি ইউরোপ ও লাতিন আমেরিকার বাজারে আবার গতি ফিরে পেয়েছে, বিশেষ করে রেডমি নোট ও পোকো সিরিজের জনপ্রিয়তার কারণে।
আইডিসির মোবাইল ফোন গবেষণা পরিচালক অ্যান্থনি স্কার্সেলা বলেন, ‘২০২৫ সালের শেষ প্রান্তিক পর্যন্ত এ প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে আমরা আশাবাদী।’ তিনি আরও জানান, এআই-সক্ষম স্মার্টফোনের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে, কারণ বড় কোম্পানিগুলো কম দামে উন্নত মডেল বাজারে আনছে।
তবে সংস্থাটির ধারণা, ২০২৫ সালে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারে সামান্য প্রবৃদ্ধিই দেখা যাবে।

