রাশিয়ার প্রধান দুটি তেল কোম্পানি রসনেফট ও লুকঅয়েলের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর চীনের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানিগুলো রুশ তেল কেনা স্থগিত করেছে। গত বৃহস্পতিবার এই তথ্য বার্তা সংস্থা রয়টার্স নিশ্চিত করেছে।
পদক্ষেপটি এমন সময় এসেছে, যখন রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্রেতা ভারতও রুশ তেল আমদানি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইউক্রেন ইস্যুতে মস্কোর বিরুদ্ধে নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে তাল মেলাতে ভারতীয় শোধনাগারগুলো এই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়ার দুই বৃহত্তম ক্রেতা চীন ও ভারতের তেলের চাহিদা হঠাৎ কমলে মস্কোর আয়ে বড় ধাক্কা লাগতে পারে। একই সঙ্গে বিশ্বের বড় আমদানিকারক দেশগুলোকে বিকল্প জ্বালানি উৎস খুঁজতে হতে পারে, যা বৈশ্বিক তেলের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে।
চীনের চারটি রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি—পেট্রোচায়না, সিনোপেক, সিএনওওসি এবং ঝেনহুয়া অয়েল—সমুদ্রপথে রুশ তেল কেনা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। সূত্রের খবর, তারা মার্কিন নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের ঝুঁকিতে পড়তে চায়নি। তবে এই কোম্পানিগুলো এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। চীন প্রতিদিন প্রায় ১৪ লাখ ব্যারেল রুশ তেল সমুদ্রপথে আমদানি করে। এর বেশির ভাগই স্বাধীন রিফাইনারি বা ‘টি-পট’ নামে পরিচিত ছোট প্রতিষ্ঠানগুলোই কেনে। রাষ্ট্রীয় কোম্পানিগুলোর ক্রয়ের পরিমাণ নিয়ে বিভিন্ন অনুমান রয়েছে।
জ্বালানি বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান ভরটেক্স অ্যানালিটিকস জানিয়েছে, ২০২৫ সালের প্রথম নয় মাসে চীনের রাষ্ট্রীয় কোম্পানিগুলো রাশিয়া থেকে গড়ে প্রতিদিন ২ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেলের কম রুশ তেল আমদানি করেছে। অন্যদিকে এনার্জি অ্যাসপেক্টস এই সংখ্যাকে প্রায় ৫ লাখ ব্যারেল হিসেবে দেখায়। সংশ্লিষ্ট দুটি বাণিজ্যিক সূত্র জানিয়েছে, সিনোপেকের বাণিজ্যিক শাখা ইউনিপেক গত সপ্তাহে রুশ তেল কেনা বন্ধ করেছে। এর আগে ব্রিটেন রসনেফট ও লুকঅয়েলসহ কিছু চীনা কোম্পানির ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
সূত্র বলছে, রসনেফট ও লুকঅয়েল সাধারণত তাদের তেল সরাসরি বিক্রি না করে মধ্যস্বত্বভোগী বা মধ্যস্থ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে চীনে রপ্তানি করে। চীনের স্বাধীন শোধনাগারগুলো আপাতত নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পর্যবেক্ষণ করতে রুশ তেল কেনা স্থগিত রাখবে। তবে পরিস্থিতি পরিষ্কার হলে তারা পুনরায় রুশ তেল কিনতে পারে।

