বাংলাদেশি অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী আজ শনিবার তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন।
রাষ্ট্রদূতের ফেসবুক পোস্টে উঠে আসে, ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার একটি বিদ্যুৎ প্রকল্প চুক্তি বাতিল করলে ক্ষতিপূরণ দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ কোম্পানি স্মিথ কোজেনারেশন মামলা করে। স্মিথ কোজেনারেশন ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে বার্জ-মাউন্টেড বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য একটি চুক্তি করেছিল। কিন্তু চুক্তি বাতিলের ফলে ক্ষতির অভিযোগ তুলে কোম্পানিটি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা দায়ের করে এবং ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩১.৯ মিলিয়ন ডলার দাবি করে।
ওয়াশিংটন ডিসি সার্কিট আদালত দীর্ঘ ২৫ বছর পর এ বিষয়ে রায় প্রদান করে, যেখানে সালেহউদ্দিন আহমেদ ও আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তবে গতকাল আদালত এই পরোয়ানা স্থগিত করার নির্দেশনা দেয়। রাষ্ট্রদূত আনসারী এ নিয়ে বলেন, “লুটেরা সরকারের দায় বর্তমান সরকার নিতে পারে না।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় ধামাচাপাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
এর আগে, আমেরিকান সংবাদমাধ্যম ‘ল-৩৬০’ তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছিল যে, যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে এই রায়ের ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও কূটনৈতিক অবস্থানের ওপর একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু দেখা দিয়েছে। আইনি বিরোধটি শুরু হয়েছিল ১৯৯৭ সালে চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে এবং ১৯৯৯ সালে চুক্তি বাতিলের পর তা আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে গড়ায়। এর পরবর্তী ধাপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা দায়ের করে স্মিথ কোজেনারেশন।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই স্থগিতাদেশ সাময়িক হলেও এটি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।