উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় একটি নতুন ধাপ সংযোজনের পরিকল্পনা করছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তিনি বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কাউন্সিল গঠনের কথা জানিয়েছেন। গত ৪ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসন ভবন-৪ এর দোতলায় অবস্থিত কনফারেন্স রুমে ফুলকোর্ট সভায় এই বিষয়ে তিনি বিচারপতিদের অবহিত করেন।
এই সভায় সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিগণ অংশগ্রহণ করেন এবং সভায় ১৩৭ জন বিচারকের পদোন্নতির বিষয়টি অনুমোদন করা হয়। এর মধ্যে ১০ জন অতিরিক্ত জেলা জজকে জেলা ও দায়রা জজ পদে, তিনজনকে যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে এবং ১২৪ জন সিনিয়র সহকারী জজকে যুগ্ম জেলা জজ পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি ২০২৫ সালের জন্য সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক বর্ষপঞ্জিও অনুমোদিত হয়।
প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, বিচারক নিয়োগে উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচন নিশ্চিত করতে একটি বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কাউন্সিল গঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন তিনি। এ বিষয়ে শীঘ্রই একটি প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। সংবিধানের অধীনে কাউন্সিল গঠনে সুনির্দিষ্ট বিধি প্রণয়নের উদ্যোগও নেবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। প্রস্তাবের বিষয়ে পরবর্তীতে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকদের সঙ্গে তিনি আলোচনা করবেন বলেও উল্লেখ করেন।
সভায় উপস্থিত সূত্র জানায়, প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে বলেন, বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এমন একটি কাউন্সিল গঠন প্রয়োজনীয়। এর মাধ্যমে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগের প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ এবং কার্যকর হবে বলে তিনি আশাবাদী।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্ট দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয় হিসেবে দুটি বিভাগে পরিচালিত হয়-আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ। এই দুটি বিভাগের বিচারপতিরা সম্মিলিতভাবে যে সভা করেন, তাকে ফুলকোর্ট সভা বলা হয়। বিচার বিভাগের প্রধান হিসেবে এই সভা আহ্বানের এখতিয়ার রয়েছে প্রধান বিচারপতির, যেখানে বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গত ৩১ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. আতিকুস সামাদের স্বাক্ষরে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়, যার মাধ্যমে এই ফুলকোর্ট সভার আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়।