হিন্দু সম্প্রদায়ের সংগঠন আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) নিষিদ্ধের ইস্যু নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শুনে মন্তব্য করে বলেন, রাষ্ট্র সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে– এটা শুনে আমরা আশ্বস্ত হলাম। এটাই ওনাদের দায়িত্ব। আশা রাখি, সবাই এটা শুনে আশ্বস্ত হবেন। দেশের জানমালের কোনো ক্ষতি না হোক– আমরা সেটাই চাই। যেহেতু সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বলা হলো, তাই এ মুহূর্তে ইসকন নিষিদ্ধের ইস্যুতে আদালত আর হস্তক্ষেপের প্রয়োজন দেখছেন না। আমরা মনে করি, আমাদের দেশের মানুষ সৌহার্দ্যপূর্ণ। এ দেশে সব ধর্মের মানুষ বন্ধুত্বপূর্ণভাবে থাকতে ভালোবাসে। সে ভালোবাসা কখনোই ভাঙবে না। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গেও আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে।
সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে হাজির করাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
এর আগে আইনজীবী হত্যার ঘটনায় সরকারের পদক্ষেপের অগ্রগতি আদালতে তুলে ধরেন রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনিক আর হক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদ উদ্দিন। তারা আদালতকে জানান, ঘটনাটিকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। এরই মধ্যে তিনটি মামলা হয়েছে। একটিতে ১৩ জন, একটিতে ১৪ জন ও অপরটিতে ৪৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৩৩ জনকে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করা হয়েছে হত্যায় জড়িত ছয়জনকে।
গত বুধবার আলিফ হত্যার ঘটনায় ইসকন নিষিদ্ধ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী মনির উদ্দিন। আবেদনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনারও আবেদন করা হয়।
এদিকে হাইকোর্টে এই শুনানির মধ্যেই ইসকন নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মিলন বলেন, আলিফ হত্যার ঘটনায় সারাদেশের আইনজীবীসহ ১৮ কোটি মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। ফ্যাসিস্ট মতাদর্শে বিশ্বাসীরা দেশি-বিদেশি দোসরদের নিয়ে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারই ধারাবাহিকতায় সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনের সদস্যরা সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।