সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফেরত আসা ১৮৯ জন ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশিকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন এবং ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ডাকযোগ ও ইমেইলের মাধ্যমে এই নোটিশ পাঠানো হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদককে বিবাদী করে এই নোটিশ পাঠানো হয়।
প্রবাসীদের ব্যবসায়িক ও আইনি সহায়তা সংস্থা (ইবলাত) এর চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম এবং মহাসচিব খালেদ সাইফুল্লাহর পক্ষে আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার এ উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
নোটিশে বলা হয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বাংলাদেশে ফেরত আসা ১৮৯ জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে যারা এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবির আল সদর জেলে এবং সিআইবি হেফাজতে আটক থাকা বাংলাদেশিদের দ্রুত মুক্তির ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিশেষ করে, ১৯ জুলাই সংযুক্ত আরব আমিরাতে সংঘটিত মিছিলের মামলাটি প্রত্যাহার বা বাতিলের জন্য বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে।
নোটিশে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, যদি আগামী ৩০ দিনের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয়, তাহলে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করা হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন দেশের মতো সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীরাও রেমিট্যান্স বন্ধের প্রতিবাদে অংশ নেন। বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ১৯ জুলাই সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন স্থানে কিছু প্রবাসী মিছিল করে। কিন্তু মিছিলকে কেন্দ্র করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৫৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে, ২১ জুলাই সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বিশেষ আদালত বসিয়ে তিনজনকে যাবজ্জীবন এবং বাকিদের ১০ বছর মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই ঘটনা বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচিত হয়। তখনকার সরকার বা সংযুক্ত আরব আমিরাতে দায়িত্বরত বাংলাদেশ দূতাবাস কোনো আইনি সহায়তা প্রদান করেনি বলে অভিযোগ করা হয়। বরং, তৎকালীন দুবাইয়ের কনস্যাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন আটক ব্যক্তিদের ‘জঙ্গি’ আখ্যা দিয়ে বিভিন্ন উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করেন, যা সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারকে ক্ষুব্ধ করে তোলে।