পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট ওলান্টা হুমালা এবং তার স্ত্রী ও সাবেক ফার্স্ট লেডি নাদিন হেরেদিয়াকে অর্থ পাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ১৫ বছর করে দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। মঙ্গলবার পেরুর রাজধানী লিমার একটি আদালতে এ বহুল আলোচিত রায় ঘোষিত হয়। এই রায়ে দেশটির রাজনীতিতে এক সময়ের গুরুত্বপূর্ণ এই দম্পতির পতন কার্যত চূড়ান্ত হলো।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, হুমালা ২০০৬ এবং ২০১১ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় ব্রাজিলের কুখ্যাত নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ওডেব্রেখ্ট থেকে অবৈধ অর্থ গ্রহণ করেছিলেন। একই অভিযোগে তার স্ত্রী নাদিন হেরেদিয়াও দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। উল্লেখ্য, নাদিন হেরেদিয়া পেরুর ন্যাশনালিস্ট পার্টির সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবেও পরিচিত।
প্রসিকিউশন তাদের জন্য আরও দীর্ঘ শাস্তির দাবি করেছিল। তারা চেয়েছিল, হুমালাকে ২০ বছর এবং হেরেদিয়াকে ২৬ বছর ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হোক। কিন্তু বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত উভয়ের জন্য ১৫ বছর করে শাস্তি নির্ধারণ করে।
দীর্ঘ তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসা এই মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার রায় ঘোষণার সময় ৬২ বছর বয়সী হুমালা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে তার স্ত্রী নাদিন হেরেদিয়া ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানিতে অংশ নেন। দুজনেই বরাবরই নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আসছিলেন এবং অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
ওডেব্রেখ্ট কেলেঙ্কারি দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। পেরুতে হুমালা প্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট যিনি এই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে দণ্ডিত হলেন। এই কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও কয়েকজন সাবেক পেরু প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে।
এই রায় দেশটির বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা এবং দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির স্থাপন করল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যদিও রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এই দম্পতির বিরুদ্ধে এ ধরনের রায় পেরুর রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।