স্বাস্থ্য অধিদফতরের আলোচিত সাবেক গাড়িচালক আব্দুল মালেক ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে আদালত তাদের পৃথক মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেন বুধবার (১৬ এপ্রিল) এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ে আব্দুল মালেককে পাঁচ বছর এবং তার স্ত্রী নার্গিস বেগমকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া উভয়কে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। একইসঙ্গে তাদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত এক কোটি ১০ লাখ ৯৩ হাজার ৫০ টাকার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর আসাদুজ্জামান রানা গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রায় ঘোষণার সময় আব্দুল মালেককে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয় এবং জামিনে থাকা নার্গিস বেগম স্বেচ্ছায় আদালতে উপস্থিত হন। রায় ঘোষণার পরপরই তাদের সাজা পরোয়ানা জারি করে কারাগারে পাঠানো হয়।
এ মামলার শুরু ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, যখন দুদকের সহকারী পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আব্দুল মালেক ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগমের বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় বলা হয়, তারা জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ এক কোটি ১০ লাখ ৯২ হাজার ৫০ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করেছেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম।
পরে ২০২২ সালের ১১ মে আদালত অভিযোগ গঠন করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার কার্যক্রম শুরু করেন। বিচার চলাকালে মামলায় ১০ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
এই মামলার আগে এবং পরে আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন আব্দুল মালেক। গত ২৩ মার্চ, অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে একই আদালত তাকে পৃথক দুই ধারায় ১৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। এরও আগে ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর অস্ত্র আইনের মামলায় তাকে দুই ধারায় মোট ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
আলোচিত এসব মামলার প্রেক্ষাপটে আব্দুল মালেকের নামে অস্বাভাবিক সম্পদ অর্জন, দুর্নীতির বিস্তার এবং ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে একাধিকবার আলোচনায় এসেছে। তার বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলোর রায় বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানকে আবারও স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে।