বাংলাদেশি জাতি হিসেবে আমরা প্রায়ই বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় মুগ্ধ থাকি এবং অতীতকে ভুলে যাই। তারচেয়ে বড় সমস্যা হলো, আমরা ইতিহাসকে এমনভাবে নতুন করে লিখতে চাই যেন বর্তমানকে অতিরিক্ত মূল্য দেওয়া হয় এবং অতীতকে অবজ্ঞা করা হয়। এর ফলে অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ হারাই এবং একই ভুল বারবার করি। আমাদের ইতিহাসে এমন উদাহরণ প্রচুর। এটি আমাদের আবেগপ্রবণ স্বভাব ও অগভীর জ্ঞানের প্রতিফলন।
ফলস্বরূপ, বিতর্কের পরিবর্তে আমরা বাগাড়ম্বরের পথে চলি। যুক্তি বা বিশ্লেষণের বদলে উচ্চস্বরে চিৎকারের ক্ষমতা আধিপত্য নির্ধারণ করে। রাজনৈতিক পরিসরে এই আচরণ আমাদের নীতিনির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণকে বিপথগামী করে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, অতীত শাসনব্যবস্থার পতনের পর ক্ষমতার শূন্যতা থেকে আমরা রাজনৈতিক সুবিধা লুটে নিতে মরিয়া হই। এ প্রক্রিয়ায় সত্য, নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও জাতীয় স্বার্থ প্রায়শই উপেক্ষা করা হয়। ব্যক্তি স্বার্থসিদ্ধির জন্য বর্তমান ক্ষমতাকে ব্যবহার করে নিজেদের প্রয়োজনে ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়। এই বিকৃত প্রচেষ্টা কখনোই সময়ের পরীক্ষায় টিকে থাকে না। এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো হাসিনার ক্ষমতাসীনতার অব্যাহত পরিস্থিতি। তবু আমরা বুঝতে চাই না এবং একই পথে হাঁটতে থাকি, একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করি।

বর্তমান ক্ষমতাসীনরা বাগাড়ম্বর করে এই বাস্তবতাকে আমাদের মধ্যে স্থাপন করতে চাচ্ছেন। তাদের বক্তব্য হলো—‘৭১ পরবর্তী ইতিহাসে বড় ভুল বা বিকৃতি রয়েছে এবং সেগুলো পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজন’। এটি যদি বুদ্ধিবৃত্তিক অনুসন্ধান হয়, সবাই উপকৃত হবে। কিন্তু যদি এটি রাজনৈতিক প্রকল্প হয়, তাহলে তা দেশীয় স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর। যারা এখনও বাংলাদেশকে পুরোপুরি বিশ্বাস করেন না, তারা এই বিপদের বাইরে থাকবেন। কিছু বক্তা নিজেদের ‘সত্যের’ অভিভাবক মনে করেন। তাদের প্রশ্ন করলে সেটিকে অতীতকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা হিসেবে দেখা হয়। এর মাধ্যমে মুক্তচিন্তা, সমালোচনামূলক মূল্যায়ন ও অনুসন্ধানের ইচ্ছা দমন করা হয়।
সংবিধান ও একনায়কতন্ত্র:
বর্তমানে আমাদের সংবিধান নিয়ে যেভাবে আলোচনা হচ্ছে এবং যেভাবে তা ব্যবহার করা হচ্ছে, তা অতীতকে অবমূল্যায়ন করার একটি স্পষ্ট উদাহরণ। শেখ হাসিনার একনায়কতন্ত্রের উত্থান এবং ক্ষমতার যথেচ্ছ ব্যবহার ১৯৭৩ সালে প্রাপ্ত সংবিধানের কোনো ধারায় নির্ধারিত ছিল না। সংবিধানে আইনসভা, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার বিভাজন সুস্পষ্টভাবে প্রণীত ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে এই ভারসাম্য ভঙ্গ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু, জিয়াউর রহমান, এইচ এম এরশাদ, খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা—সবাই তাদের সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ব্যবহার করে নির্বাহী ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছেন। এর ফলে আইনসভা ও বিচার বিভাগ ধীরে ধীরে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে।

এই ভুলগুলো মূলত আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিরই ফল। ক্ষমতাসীন দলগুলো সংখ্যাগরিষ্ঠতা ব্যবহার করে ‘চেক অ্যান্ড ব্যালান্স’ ব্যবস্থাকে খর্ব করেছে। গত ৩০ বছরের সংসদীয় গণতন্ত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কখনো বিচার বিভাগ বা সংসদকে শক্তিশালী করতে উদ্যোগ নেয়নি। বরং তারা নির্বাহী বিভাগকে শক্তিশালী করেছে।
সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের প্রভাব, বিরোধীদলের সীমিত ভূমিকা এবং স্পিকারের প্রহসনমূলক আচরণ—সব মিলিয়ে গণতান্ত্রিক সংবিধানকে একনায়কতান্ত্রিক কাঠামোতে রূপান্তরিত করেছে। ঘন ঘন ওয়াকআউট, বয়কট এবং সম্প্রতি সংসদ থেকে পদত্যাগের মতো ঘটনা সংসদীয় প্রক্রিয়ার অপব্যবহারকে আরও উৎসাহিত করেছে। শাসক দল একক আধিপত্য পেয়েছে, নিজের ইচ্ছামতো কাজ করতে সক্ষম হয়েছে। স্থায়ী কমিটিগুলোও প্রধানমন্ত্রীর অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতার কারণে সরকারের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোট সংবিধানকে নিজেদের ক্ষমতালিপ্সু এজেন্ডার সঙ্গে মানানসই করে সংশোধন ও বিকৃত করেছে।
বাংলাদেশের সংবিধান ইতিহাসে এক দুঃখজনক উদাহরণ হলো একদলীয় শাসনব্যবস্থা, অর্থাৎ বাকশাল। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে সংবিধানকে সম্পূর্ণ বিকৃত করা হয়। সংসদীয় পদ্ধতিকে রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থায় রূপান্তরিত করা হয়। সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হয় এবং দেশকে একদলীয় রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়। সমস্ত ব্যক্তিমালিকানাধীন সংবাদপত্র বন্ধ করে চারটি পত্রিকাকে জাতীয়করণ করা হয়। সংবিধানের সব গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ চুরি করা হয়। বলা হয়, মাত্র ৩০ মিনিটেরও কম সময়ে এসব করা হয়েছিল।
২০২৪ সালের ৩ আগস্ট তোলা একটি ছবি দেখাচ্ছে কীভাবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। তা সত্ত্বেও, জুলাই ঘোষণাপত্রে ভাষা আন্দোলনের স্থান নেই। এরপর আসে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রণীত দায়মুক্তি আইন। পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সব কার্যক্রম ও সাংবিধানিক পরিবর্তনকে বৈধতা দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে আত্মস্বীকৃত খুনিদের সাংবিধানিক সুরক্ষা দেওয়া হয় এবং সংবিধানের নৈতিক মূল্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

পরবর্তী কিছু সংশোধনী করা হয়েছিল ‘সাংবিধানিক প্রক্রিয়া’ পূরণ না করেই। শাসক দল আদেশ দেয় এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যরা তা বাস্তবায়ন করে। ব্যতিক্রম ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার, যা দ্বিদলীয় ঐকমত্য থেকে প্রবর্তিত হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এটি নির্বাচনে কারচুপির উদ্দেশ্যে বিলোপ করা হয়। এর প্রভাব আমরা প্রত্যক্ষ করেছি ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংবিধান সংশোধনে একাধিক প্রস্তাবনা অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং জুলাই সনদ প্রণয়নে কঠোর পরিশ্রম করেছে।
আগামী সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হলে, সব রাজনৈতিক দলকে একসঙ্গে কাজ করে সংবিধান সংশোধনে অঙ্গীকার করা এবং জুলাই সনদের ধারাগুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। সংসদে ভোটের মাধ্যমে সংশোধনী সংবিধানে যুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এ যাবৎ অর্জিত অগ্রগতির বৈধতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রযোজ্য নয়। তাই ‘অঙ্গীকারনামা’র গুরুত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অঙ্গীকারনামার ২ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জনগণ এই রাষ্ট্রের মালিক। তাদের ইচ্ছাই হলো সর্বোচ্চ আইন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণের ইচ্ছা রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে প্রতিফলিত ও প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই অনুযায়ী রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো যৌথভাবে গৃহীত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ কে জনগণের ইচ্ছার স্পষ্ট ও সর্বোচ্চ প্রকাশ হিসেবে বিবেচনা করবে। সনদের সব বিধান, নীতি ও সিদ্ধান্ত সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে। বিদ্যমান সংবিধান বা অন্য কোনো আইনে যদি এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু থাকে, তবে এই সনদের বিধান/প্রস্তাবনাই কার্যকর হবে।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ২৩তম দিনের আলোচনা শেষ হয়। আলোচনা চলাকালীন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে এবং নির্বাচিতদের অবশ্যই সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। অঙ্গীকারনামার ৪ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর প্রতিটি বিধান, প্রস্তাব ও সুপারিশ সাংবিধানিক ও আইনগতভাবে বলবৎ হবে। এর ফলে এর বৈধতা, প্রয়োজনীয়তা বা জারি সংক্রান্ত কর্তৃত্ব আদালতে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না।
যদি আমরা ২ নম্বর অনুচ্ছেদের প্রথম লাইনগুলো দেখি—’জনগণ রাষ্ট্রের মালিক’ ঠিক আছে। ‘তাদের ইচ্ছাই সর্বোচ্চ আইন’—ঠিক আছে। কিন্তু ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণের ইচ্ছা রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে প্রতিফলিত ও প্রতিষ্ঠিত হয়’—এই অংশে সমস্যার সূচনা হয়। এটি রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে ইচ্ছার অনুবাদকে প্রাধান্য দেয়, যা সরাসরি জনগণের স্বাধীন মত প্রকাশকে সীমিত করতে পারে।
দ্বিতীয় দফার ঐকমত্য সংলাপে মোট ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ১১টি দল এখনো নিবন্ধিত নয়। চারটি দল নিবন্ধন পেয়েছে গণঅভ্যুত্থানের পর। অর্থাৎ এই ১৫টি দল কখনো কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। তাই তারা কত ভোট পাবে, তা নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। তারা হয়তো বিপুল ভোট পেতে পারে, আবার অতি সামান্য ভোটও পেতে পারে। যেহেতু আমরা তা জানি না, তাই অনুমানও করা যায় না। উদাহরণ হিসেবে, ২০০৮ সালের নির্বাচনে ছয়টি রাজনৈতিক দল শূন্য ভোট পেয়েছিল।
গণতন্ত্রে প্রতিটি নাগরিকগোষ্ঠীর রাজনৈতিক দল গঠন ও কার্যক্রম চালানোর অধিকার রয়েছে—যতক্ষণ পর্যন্ত তারা আইন মেনে চলে। একটি দল বিশ্বের সবচেয়ে ভালো আদর্শ উপস্থাপন করতে পারে, কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচনের মাধ্যমে জনসমর্থনের পরীক্ষায় অংশ নেয় না, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী বলা যায় না।
নতুন দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হলো জাতীয় নাগরিক পার্টি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দলটি গঠন করা হয়। হাসিনার স্বৈরশাসন উৎখাতে পুরো জাতি তাদের পেছনে দাঁড়িয়েছিল এবং জনগণ তাদের সমর্থন দিয়েছিল। তবে এটি একটি নির্দিষ্ট কাজের জন্য ছিল—আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরানো। এখন দলটি তাদের নিজস্ব মতাদর্শ ও জাতীয় লক্ষ্য নিয়ে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাচ্ছে। অতীতের এই সমর্থন তাদের বর্তমান জনসমর্থনের মানদণ্ড হিসেবে গণ্য করা যাবে না।
উদাহরণ হিসেবে ২০০৮ সালের নির্বাচন দেখলে, অধিকাংশ মানদণ্ডে তা অবাধ ও সুষ্ঠু হিসেবে বিবেচিত। ভোটের হার ছিল—আওয়ামী লীগ ৪৮ শতাংশ, বিএনপি ৩২.৫০ শতাংশ, জাতীয় পার্টি ৭.০৪ শতাংশ, জামায়াত ৪.৭০ শতাংশ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ২.৯৮ শতাংশ। স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ এই চারটি দল মোট ৯৫.২২ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। তবে দুটি দল আজকের দিনে আর নেই। ওই নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াত ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মোট ৪০.১৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিল অর্থাৎ, ঐকমত্য কমিশনের প্রাপ্ত ঐক্যমত্য ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ভোটারদের মাত্র ৪০.১৮ শতাংশের মতামত প্রতিফলিত করছে। এগুলো চূড়ান্ত তথ্য নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নিয়ে একটি গুরুতর সমালোচনা রয়েছে, যা গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে উপেক্ষা করা যায় না। এবং করা উচিতও নয়। সেটি হলো—নারীর অংশগ্রহণ। আমাদের জনসংখ্যা ও ভোটারের প্রায় ৫০ শতাংশ নারী। অথচ জুলাই সনদ প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় নারী কণ্ঠ প্রায় উপস্থিত ছিল না। হাতে কয়েকটি সেশনে দু-একজন নারী ছিলেন। অথচ এই সনদের ধারাগুলো আমাদের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে এবং বিদ্যমান অন্য সব ধারার ওপর কার্যকর হবে। নারী ভোটারদের উপেক্ষা করে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা লজ্জাজনক এবং একধরনের নৈতিক ‘অপরাধ’। এই দায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে সবসময় বহন করতে হবে। তবে এর পরেও এই প্রক্রিয়াকে গণতান্ত্রিক ঐকমত্য হিসেবে ধরা যাবে কীভাবে, তা প্রশ্নবিদ্ধ।
বিএনপির মতো দলগুলোতে লাখো নারী ভোটার রয়েছেন। তারপরও তাদের প্রতিনিধি দলে একজন নারী সদস্যকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যদি ৪৭ বছরের পুরনো রাজনৈতিক দল নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার গুরুত্ব অনুভব না করে, তাহলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতিবেদনে নারী ভোটারদের অধিকারের বিষয়টি কতটা প্রতিফলিত হবে, তা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে থেকে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের গণতন্ত্র শক্তিশালী করতে হলে সংবিধান ও আইন ঠিকভাবে মেনে চলা, নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষা করা প্রয়োজন। অতীতের ভুল পুনরাবৃত্তি না করে এখনই স্বচ্ছতা, অন্তর্ভুক্তি ও যৌথ উদ্যোগে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। না হলে ব্যক্তিগত স্বার্থ ও ক্ষমতার লিপ্সা জাতীয় স্বার্থকে ছাপিয়ে যেতে পারে।

