সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লিয়াজোঁ অফিসার পরিচয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। অভিযুক্ত ব্যক্তি মোতাল্লেছ হোসেন। তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা হয়েছে।
আজ সোমবার সিআইডির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মোতাল্লেছ হোসেনের নামে খোলা ব্যাংক হিসাবে প্রায় ২০ কোটি টাকার লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, তিনি নানা সময়ে ভিন্ন ভিন্ন পরিচয়ে প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। কখনো পোশাক কারখানার মালিক, কখনো চা-বাগান উদ্যোক্তা, আবার কখনো ঠিকাদার পরিচয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছেন।
সিআইডি বলছে, মোতাল্লেছ হোসেনের এম এল ট্রেডিং নামে একটি প্রতিষ্ঠান থাকলেও বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই। ট্রেড লাইসেন্স থাকলেও প্রতিষ্ঠানটির কোনো ব্যবসায়িক কার্যক্রম পাওয়া যায়নি। এভাবে ভুয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে তিনি ব্যাংক হিসাব খুলে কোটি কোটি টাকার লেনদেন চালাতেন। তদন্তে আরও উঠে এসেছে, খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা বলে বিএনপি–সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। এসব অর্থ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে আত্মসাৎ করেন।
সিআইডির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোতাল্লেছ হোসেনের বিভিন্ন হিসাবে থাকা পাঁচ কোটি টাকার বেশি অর্থ আদালতের নির্দেশে ইতোমধ্যেই জব্দ করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তারা মনে করছেন, এ ঘটনায় আরও কিছু ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে। তাদের খুঁজে বের করতে অনুসন্ধান চলছে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রোববার বিকেলে রাজধানীর পল্লবী থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২–এর অধীনে মামলা (নম্বর–১৯) করা হয়। মামলায় মোতাল্লেছ হোসেন ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও দু–তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধরনের প্রতারণা শুধু সাধারণ মানুষ নয়, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী মহলকেও টার্গেট করছে। তাই ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রতারণা ঠেকাতে আরও নজরদারি ও তদন্ত জোরদার করা হবে।

