সরকার সম্প্রতি সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রণয়ন করেছে। এই আইন সাইবার স্পেসে অর্থাৎ অনলাইন জগতে সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধ শনাক্তকরণ, প্রতিরোধ, দমন ও বিচার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে তৈরি। আইনটি মূলত সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং অনলাইন অপরাধীদের কার্যকরভাবে দণ্ডিত করার লক্ষ্যে গৃহীত।
আইনের অধীনে অনলাইনে জুয়া খেলা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই অপরাধের জন্য সর্বাধিক ২ বছর কারাদণ্ড বা সর্বাধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড, অথবা উভয় দণ্ডের ব্যবস্থা আছে। আইনের ২০ ধারা স্পষ্টভাবে অনলাইনে জুয়ার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত কার্যকলাপকে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেছে:
- পোর্টাল, অ্যাপস বা ডিভাইস তৈরি বা পরিচালনা: কেউ অনলাইনে জুয়া খেলার জন্য যে কোনো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বা সফটওয়্যার তৈরি বা চালু করে।
- জুয়া খেলার অংশগ্রহণ: কেউ সরাসরি অনলাইনে জুয়া খেলায় অংশ নিলে।
- সহায়তা বা উৎসাহ প্রদান: কেউ অন্যকে জুয়া খেলায় অংশ নিতে সাহায্য বা উৎসাহ প্রদান করলে।
- বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা: কেউ অনলাইনে জুয়ার প্রচারণায় অংশ নিলে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তা প্রচার করলে। এই কার্যকলাপ সবই অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
শাস্তি ও অর্থদণ্ড: উপরোক্ত ধারা অনুযায়ী অপরাধ সংঘটিত হলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি হতে পারেন:
- সর্বাধিক ২ বছর কারাদণ্ড
- অথবা সর্বাধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড
- বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত
আইনের ধারায় বলা আছে, এই ধরনের অপরাধ আনুমান্য ও জামিনযোগ্য। অর্থাৎ, অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতের অনুমতি পেলে জামিনে থাকতেও পারেন।
বিচার প্রক্রিয়া: অপরাধীদের বিচার সাইবার ট্রাইব্যুনাল করবে। ট্রাইব্যুনাল দ্রুত ও কার্যকরভাবে মামলা নিষ্পত্তি করার ক্ষমতা রাখে। এটি সাধারণ আদালতের মতোই আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করবে, তবে বিশেষভাবে অনলাইন অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করবে।
সাইবার স্পেসে জুয়া শুধু আর্থিক ক্ষতির কারণ নয়, এটি সামাজিক ও মানসিক প্রভাবও ফেলে। শিশু ও তরুণদের মধ্যে অনৈতিক আচরণ, আর্থিক দুর্বলতা ও অপরাধ প্রবণতা বাড়াতে পারে। তাই আইনটি ডিজিটাল সমাজকে সুরক্ষিত রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

