আপনি জমি বায়না করেছেন বা চুক্তি করেছেন, কিন্তু বিক্রেতা জমি রেজিস্ট্রি করাতে গড়িমসি করছে। এমন পরিস্থিতিতে বায়না দলিল অনুযায়ী আপনি জমি রেজিস্ট্রি করাতে বা চুক্তি বাস্তবায়নে বাধ্য করতে পারেন। প্রয়োজনে ক্ষতিপূরণও আদায় করা সম্ভব।
বায়না চুক্তির আইনগত বিধান: সম্পত্তি হস্তান্তর আইনের ৫৩ (খ) ধারা অনুযায়ী বায়না বলবৎ থাকলে, বায়নাকৃত স্থাবর সম্পত্তি বায়না গ্রহীতা ব্যতীত অন্য কারো কাছে বিক্রি করা যাবে না। তবে বায়না দলিলটি আইনসম্মতভাবে বাতিল হলে এই বিধান প্রযোজ্য হবে না। সাধারণত ক্রেতা সময়মতো টাকা জোগাতে না পারলে এই ধরনের জটিলতা দেখা দেয়।
বায়না চুক্তি বাতিলের প্রক্রিয়া:
উভয় পক্ষ রাজী থাকলে: যদি ক্রেতা ও বিক্রেতা দুজনই চুক্তি বাতিল করতে রাজী হন, তবে তারা সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে ‘বাতিল দলিল’ তৈরি করতে হবে। উভয়পক্ষের স্বাক্ষরসহ দলিল রেজিস্ট্রি হলে চুক্তি বাতিল হয়ে যায়।
ক্রেতা রাজী না থাকলে: এই ক্ষেত্রে আইনজীবীর মাধ্যমে ক্রেতাকে উকিল নোটিশ পাঠাতে হবে। নোটিশে বাকি টাকা পরিশোধের নির্দিষ্ট সময় দেয়া হয় এবং উল্লেখ করা হয়, সময়মতো টাকা না দিলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
- যদি ক্রেতা সময়মতো টাকা পরিশোধ করে জমি রেজিস্ট্রি করে, সমস্যা সমাধান।
- না হলে বিক্রেতা আদালতে চুক্তি বাতিলের মামলা করতে পারেন।
আইনি বিধান ও শর্ত: ভুক্তভোগী ব্যক্তি সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ১৮৭৭ এর ১২ ধারা অনুযায়ী আদালতে চুক্তি বাতিলের মামলা করতে পারবেন। তবে:
-
মামলা চুক্তি সম্পাদনের বা অস্বীকারের তারিখ থেকে এক বছরের মধ্যে করতে হবে।
-
আদালতের মাধ্যমে চুক্তি বলবৎ করতে হলে: চুক্তি বা বায়নানামা লিখিত ও রেজিস্ট্রি হতে হবে। বায়নার অবশিষ্ট টাকা আদালতে জমা দিতে হবে।
আদালত সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে সন্তুষ্ট হলে চুক্তি বাতিলের রায় দিতে পারে। প্রয়োজনে বিক্রেতাকে ক্ষতিপূরণের জন্য বায়নার টাকা রাখার নির্দেশ দিতে পারে। রায় পাওয়ার পর বিক্রেতা পুনরায় জমি বিক্রি করতে পারবেন।