আইন মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি ১ হাজার ১০৩ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এই প্রস্তাব আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ফুলকোর্ট সভায় অনুমোদনের জন্য উঠছে। সভা অনুমোদন দিলে প্যানেল আবার আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর সময়ে সময়ে পদ খালি হওয়া সাপেক্ষে পদোন্নতি দেওয়া হবে।
বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য প্যানেল তৈরি করা হয়। পদ শূন্য হলে ওই প্যানেল থেকে পর্যায়ক্রমে পদোন্নতি দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে আজ প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ ফুলকোর্ট সভা ডেকেছেন। বেলা ৩টায় সুপ্রিম কোর্ট কনফারেন্স রুমে সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্র জানিয়েছে, এবার পদোন্নতির প্যানেলে রয়েছেন:
- অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ থেকে জেলা ও দায়রা জজ পদে ৩৪৫ জন
- যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পদে ২০৭ জন
- সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ পদে ৫৫১ জন
মোট ১ হাজার ১০৩ জন বিচারক এবার প্যানেলে রয়েছেন। তবে, প্যানেলে কয়েকজন বিতর্কিত কর্মকর্তার নামও রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধান চলমান। পদোন্নতির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন ফুলকোর্ট সভা। সভার মতামত অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে আইন মন্ত্রণালয়।
একাধিক বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এত সংখ্যক কর্মকর্তাকে একসঙ্গে পদোন্নতির প্যানেলে পাঠানো এটাই প্রথম। বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি ১৯১টি জেলা জজের পদ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত পৃথক হওয়ায় নতুন আদালত তৈরি হয়েছে। এজন্য একসঙ্গে এত বিচারকের পদোন্নতির জন্য প্যানেল তৈরি করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন বলেন, এবারের ফুলকোর্ট সভায় ২০২৬ সালের ক্যালেন্ডার ও পদোন্নতি সংক্রান্ত কিছু বিষয় অনুমোদনের জন্য রয়েছে। নতুন পদ সৃষ্টি হয়েছে এবং বিভিন্ন ব্যাচের পদোন্নতির প্রস্তাব এসেছে। এজন্য সংখ্যাটা বেশি মনে হচ্ছে, যা স্বাভাবিক।
সব মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতির জন্য ডিপিসি (বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি) থাকে। কমিটি প্যানেল চূড়ান্ত করলে তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে যায়। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে একদিনের মধ্যে আদেশ জারি হয়। বিচারকদের ক্ষেত্রে প্যানেল চূড়ান্ত হওয়ার পর তা সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়। সভায় অনুমোদন হলে প্যানেল আবার মন্ত্রণালয়ে যায়। এরপর রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিলে প্যানেল সংরক্ষিত থাকে এবং পদ খালি হলে সময়ে সময়ে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বিধিমালা ২০০৭ অনুযায়ী:
- সিনিয়র সহকারী জজ পদে পদোন্নতির জন্য সহকারী জজদের চার বছর দায়িত্ব পালন করতে হয়,
- সিনিয়র সহকারী জজদের যুগ্ম জেলা জজ পদে দুই বছর,
- যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে দুই বছর,
- অতিরিক্ত জেলা জজ থেকে জেলা জজ পদে দুই বছর ।

