সরকার দেশের সাধারণ মানুষের জমি সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের জটিলতা দূর করতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। এখন থেকে নতুন ভূমি আইন অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কার্যালয় থেকেই পাঁচ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ জমি সমস্যা দ্রুত সমাধান করা যাবে। এ সমস্যা সমাধানের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র তিন মাস।
ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিধিমালা ২০২৩ অনুযায়ী আদালতের দীর্ঘ প্রক্রিয়া এড়িয়ে ডিসি অফিস সরাসরি এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারবে। নিম্নলিখিত পাঁচটি সমস্যা সমাধানযোগ্য হবে:
ওয়ারিশদের মধ্যে জমি বিরোধ: যদি কোনো ওয়ারিশ অন্যদের বঞ্চিত করে জমি দখল বা নামজারি করেন, আদালতে না গিয়েই ডিসি অফিসে আবেদন করে দ্রুত সমাধান পাওয়া যাবে।
সরকারি খাস জমি জবরদখল: রাস্তা, খাল বা সরকারি খাস জমি কেউ দখল করলে ডিসি অফিস তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে, যাতে সাধারণ মানুষের চলাচল বা ব্যবহারে কোনো সমস্যা না হয়।
খাল বা জলাশয় ভরাট/খনন: অনুমতি ছাড়া খাল, দোবা বা জলাশয় ভরাট বা খনন করলে এবং পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে, ডিসি অফিস অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
হঠাৎ জমি দখল বা উচ্ছেদ: যদি কেউ বলপ্রয়োগের মাধ্যমে জমি দখলের চেষ্টা করেন বা উচ্ছেদ করতে চান, ভুক্তভোগী সরাসরি ডিসি অফিসে অভিযোগ জানাতে পারবেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বৈধ মালিকানা থাকা সত্ত্বেও নামজারি বা খতিয়ান সংশোধনের বাধা: বেশি ব্যবসায়িক, জনস্বার্থ সংক্রান্ত বা বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যদি নামজারি বা খতিয়ান সংশোধনের সমস্যা থাকে, তবে তিন মাসের মধ্যে সমাধান নিশ্চিত করার নির্দেশ রয়েছে।
সমাধান পেতে নির্ধারিত ফরমে ডিসি অফিসে আবেদন করতে হবে। এরপর একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠপর্যায়ে তদন্ত করবেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—আবেদন গ্রহণের তিন মাসের মধ্যে সমাধান দিতে হবে অথবা কেন সমাধান সম্ভব হলো না তার ব্যর্থতার কারণসহ প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
যদিও এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত এখনো দেশের সব জেলা বা বিভাগে পুরোপুরি কার্যকর হয়নি এবং পর্যাপ্ত জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্টের অভাব একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়েছে, সরকার দ্রুতই সারাদেশে এই ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা করছে।

