বাংলাদেশে ভূমি মালিকদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি শেষ করতে সরকার তিনটি নতুন খাজনা আদায় পদ্ধতি চালু করেছে। এখন থেকে জমি মালিকরা আরও সহজে, নিরাপদে ও স্বচ্ছভাবে তাদের ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা পরিশোধ করতে পারবেন।
খাস জমিসহ নামজারি ও খাজনা প্রদান: আগে জমির মধ্যে খাস জমি থাকলে দলিল বা রেকর্ড অনুযায়ী নামজারি ও খাজনা দেওয়া যেত না। এখন সরকার সিদ্ধান্ত দিয়েছে, খাস জমি থাকলেও মালিকরা তাদের ব্যক্তিগত অংশের জন্য নামজারি ও খাজনা দিতে পারবেন। এসএলআর কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে একজন আমিন বা সার্ভেয়ার জমির স্কেচ তৈরি করবেন। এতে স্পষ্ট হবে কতটুকু জমি ব্যক্তিমালিকানাধীন এবং কতটুকু খাস। খাস অংশ বাদ দিয়ে বাকি জমির জন্য মালিক নামজারি ও নিয়মিত খাজনা দিতে পারবেন। ফলস্বরূপ সরকার রাজস্ব পাবে এবং ভূমি মালিকরাও জমি বিক্রি, রেকর্ড সংশোধন ও নামজারি সহজে করতে পারবেন।
ওয়ারিশান সম্পত্তির নামজারিতে নতুন নিয়ম: আগে ওয়ারিশদের মধ্যে বণ্টননামা দলিল না থাকলে নামজারি সম্ভব ছিল না। এখন ওয়ারিশান সনদ দিয়েও নামজারি করা যাবে। তবে সকল ওয়ারিশকে একসাথে আবেদন করতে হবে। এসএলআর কর্মকর্তা যাচাই শেষে সকল ওয়ারিশের নামে যৌথ খতিয়ান ইস্যু করবেন অর্থাৎ এককভাবে নয়, বরং ঐক্যবদ্ধভাবে আবেদন করলে ওয়ারিশান সম্পত্তির নামজারি সম্পন্ন হবে। এই পদক্ষেপে উত্তরাধিকারীদের প্রশাসনিক জটিলতা ও হয়রানি অনেক কমবে।
খাজনা সংক্রান্ত অভিযোগে ২৪ ঘণ্টা কল সেন্টার: যারা জমির সঠিক খাজনার পরিমাণ বা মৌজার রেট জানেন না, তাদের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় চালু করেছে ২৪ ঘণ্টা সচল কল সেন্টার (নম্বর: ১৬২২২)। ভূমি মালিকরা ফোন করে জেলা, থানা, মৌজা ও জমির তথ্য দিলে কর্মকর্তারা সঠিক খাজনার পরিমাণ ও প্রদানের পদ্ধতি জানিয়ে দেবেন। সেবা সপ্তাহে সাত দিন, দিনে ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে, যাতে কোনো নাগরিক প্রতারিত না হন।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশের প্রতিটি উপজেলায় ধীরে ধীরে সফটওয়্যারভিত্তিক এই ডিজিটাল খাজনা আদায় ব্যবস্থা চালু করা হবে। এতে ভূমি প্রশাসন আরও আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর ও জনগণবান্ধব হবে।

