ফোনে অশ্লীল বা অশোভন বার্তা পাঠালে হতে পারে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা। কাউকে বারবার ফোন করে বিরক্ত করলেও দিতে হতে পারে এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড। এসব শাস্তির প্রস্তাব রাখা হয়েছে ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ায়।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ গতকাল বুধবার (৫ নভেম্বর) খসড়াটি প্রকাশ করেছে। অংশীজন ও সাধারণ নাগরিকদের মতামতের জন্য এটি বিভাগের ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। অধ্যাদেশের ধারা ৭০ অনুযায়ী, যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া কাউকে বারবার ফোন করে বিরক্ত করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। ধারা ৬৯-এ বলা হয়েছে, টেলিযোগাযোগ বা বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে অশ্লীল, ভীতিকর, অপমানজনক বা অশোভন কোনো বার্তা, ছবি বা ভিডিও পাঠালে দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ দেড় কোটি টাকা জরিমানা, বা উভয় দণ্ড দেওয়া যাবে। গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধানও রাখা হয়েছে। এছাড়া, বেআইনিভাবে আড়ি পাতলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা দেড় কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
খসড়া অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ইন্টারনেটভিত্তিক সব সেবা—যেমন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, অনলাইন মেসেজিং ও ভিডিও স্ট্রিমিং অ্যাপ—সরকারের অনুমোদনের আওতায় আসবে। এসব প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশে নিবন্ধন নিতে হবে এবং প্রয়োজনে নিরাপত্তা সংস্থাকে তথ্য সরবরাহ করতে হবে।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, গঠিত হবে ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কমিশন’, যা একটি স্বাধীন নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কাজ করবে। কমিশন লাইসেন্স প্রদান, নীতিনির্ধারণ, স্পেকট্রাম বণ্টন ও প্রযুক্তিগত মান নিয়ন্ত্রণ করবে। পাঁচ সদস্যের এই কমিশনে থাকবেন একজন চেয়ারম্যান ও একজন ভাইস চেয়ারম্যান।
খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, অনুমতি ছাড়া টেলিযোগাযোগ সেবা বা বিদেশি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার প্রয়োজনে সরকার প্রয়োজনে যেকোনো প্ল্যাটফর্ম স্থগিত বা বন্ধ করতে পারবে। এই অধ্যাদেশের বিষয়ে মতামত পাঠানো যাবে আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত। মতামত পাঠানো যাবে ই-মেইলে—secretary@ptd.gov.bd, অথবা ডাকযোগে সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা ঠিকানায়।

