সরকার ‘বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬’ সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশ জারি করেছে। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ গেজেটে প্রকাশিত হয়েছে।
গেজেটে বলা হয়েছে, শ্রম আইন, ২০০৬-এর অতিরিক্ত সংশোধন প্রয়োজন ও সমীচীন। সংসদ ভেঙে থাকায় এবং রাষ্ট্রপতি আশু ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি প্রতীয়মান হওয়ায় সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদের ক্ষমতায় এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করা হয়েছে। অধ্যাদেশটি ‘বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ নামে অভিহিত হবে।
গত ২৩ অক্টোবর উপদেষ্টা পরিষদ এই অধ্যাদেশের খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। অনুমোদনের মাধ্যমে শ্রম আইনকে আধুনিক, আন্তর্জাতিক মানসম্মত এবং শ্রমিক ও উদ্যোক্তার জন্য ভারসাম্যপূর্ণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার।
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এক ব্রিফিংয়ে বলেন, সংশোধিত শ্রম আইন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর কনভেনশনগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, এটি যুগান্তকারী আইন। আইএলও কমিটি অব এক্সপার্টসের সুপারিশ, বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও রাষ্ট্রের মতামত এবং ত্রিপক্ষীয় কমিটির (শ্রমিক-মালিক-সরকার) আলোচনার ভিত্তিতে সংশোধন করা হয়েছে।
নতুন শ্রম আইন অনুযায়ী, গৃহকর্মী ও নাবিকদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ফলে তারা শ্রম আইনের সুরক্ষা পাবেন। নন-প্রফিট সংস্থার ক্ষেত্রেও আইন প্রযোজ্য হবে। শ্রমিকদের ব্ল্যাকলিস্টিং প্রথা অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আইনে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একই কাজের জন্য নারী ও পুরুষ শ্রমিকের বেতন বৈষম্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হয়েছে। এছাড়া কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও চিকিৎসার জন্য তহবিল গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে।

